Advertisement
E-Paper

বীরভূমে কাজলকে নিয়েই চলতে হবে কেষ্টকে, স্পষ্ট নির্দেশ দলনেত্রী মমতার, জেলা চালাবে কোর কমিটি

বীরভূম জেলা তৃণমূলের রাজনীতিতে অনুব্রতের সঙ্গে জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের দ্বন্দ্ব সর্বজনবিদিত। এক সময় কেষ্টই ছিলেন বীরভূমের অবিসংবাদী নেতা। কিন্তু সেই সময়েও নানুরের তৃণমূল নেতা কাজলের সঙ্গে সদ্ভাব ছিল না তাঁর।

CM Mamata Banerjee instructed Anubrata Mandal to take Kajal Sheikh along to run Birbhum district TMC core committee

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৫
Share
Save

বীরভূমে কাজল শেখকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে অনুব্রত মণ্ডলকে। স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের সভামঞ্চের নীচে প্রথম সারিতে বসে নেত্রীর বক্তৃতা শুনছিলেন অনুব্রত (কেষ্ট)। বীরভূম জেলা তৃণমূলের সংগঠন নিয়ে কথা বলার সময় মমতা তাঁর উদ্দেশে বলেন, ‘‘কেষ্ট, তোমায় কাজলকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে।’’ শোনামাত্রই ঘাড় পেতে সায় দেন অনুব্রত।

রাজ্য স্তরের নেতাদের নিয়ে ভোটার তালিকা ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করেছেন মমতা। ভুয়ো ভোটার চিহ্নিতকরণের কাজ করবে এই কমিটি। তবে সেই কমিটিতে বীরভূমের কোনও নেতাকে রাখেননি তিনি। সে কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, “বীরভূমকে রাখিনি, কারণ সেখানে কোর কমিটি আছে। সকলকে নিয়ে কাজ করবে। কেষ্ট, কাউকে কিন্তু বাদ দেওয়া যাবে না। কাজলকে কনফিডেন্সে নিতে হবে। আশিসদাকে (আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়) আর শতাব্দীকে (সাংসদ শতাব্দী রায়) মাঝেমাঝে ডেকে নিতে হবে। কাজ সবাই মিলে করবে।”

বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটিতে বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন হয়েছে। অনুব্রতের জেলযাত্রার পর ২০২৩ সালের মার্চ মাসে জেলা সংগঠনের কাজকর্মের জন্য একটি কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন মমতা। তাতে ৯ জন সদস্য ছিলেন। ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস, জেলা সভাধিপতি কাজল, বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল এবং জেলা তৃণমূলের দুই নেতা বিশ্ববিজয় মাড্ডি ও সুদীপ্ত ঘোষ। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ওই কোর কমিটি পুনর্গঠিত হয়। সদস্যসংখ্যা কমিয়ে আনা হয়ে পাঁচে। কাজল-সহ দুই সাংসদ শতাব্দী এবং অসিতকে কোর কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরে বাদ যান তৃণমূল নেতা বিশ্ববিজয়। তবে সেপ্টেম্বরে অনুব্রত জেল থেকে ছাড়া পেলে তাঁকে ওই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পাশাপাশি, কাজলকে কমিটিতে ফেরানো হয়। বৃহস্পতিবার মমতার কথায় স্পষ্ট, তিনি চান, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে বিধানসভা ভোটে জোট বাঁধুন বীরভূমের দুই ‘দাপুটে’ নেতা অনুব্রত-কাজল।

বীরভূম জেলা তৃণমূলের রাজনীতিতে অনুব্রতর সঙ্গে জেলা সভাধিপতি কাজলের দ্বন্দ্ব সর্বজনবিদিত। একটা সময়ে অনুব্রতই ছিলেন বীরভূম তৃণমূলের ‘অবিসংবাদী নেতা’। তখনও নানুরের তৃণমূল নেতা কাজলের সঙ্গে সদ্ভাব ছিল না তাঁর। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অনুব্রতের মনোনীত নানুরের তৃণমূল প্রার্থী গদাধর হাজরার বিরোধিতা করে তাঁকে হারানোর অভিযোগ উঠেছিল কাজলের বিরুদ্ধে।

এর মধ্যেই ২০২২ সালের অগস্টে অনুব্রতকে গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই। ২০২৩ সালের মার্চে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির তিহাড় জেলে। গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর জামিন পান তিনি। অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদে জয়ী হয়ে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হয়েছেন কাজল। অনুব্রতের দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে প্রায় বীরভূম তৃণমূলের অন্দরে কার্যত ‘সমান্তরাল’ গোষ্ঠী তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। বীরভূমের রাজনীতিতে অনুব্রত-কাজলের লড়াই নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে। কিন্তু মমতা চান, বিধানসভার ভোটের আগে সেই দ্বন্দ্ব মিটুক। তাই তিনি কোর কমিটিকে নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি কাজলকে নিয়ে আলাদা ‘বার্তা’ দিয়েছেন অনুব্রতকে।

Mamata Banerjee Party Meeting Netaji Indoor Stadium Anubrata Mondal Kajal Sheikh

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}