শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের নানা জায়গায় উচ্ছেদ অভিযানকে ঘিরে হইচই বেধেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই অভিযানে এক মাস বিরতি নেওয়ার কথা বললেও বিতর্ক থামছে না। এ বার স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই টালির নালার জমি ‘জবরদখলে’র অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য শুভেন্দুর দাবিকে ‘অবান্তর কথা’ বলে খারিজ করে দিয়েছে।
রাজ্য বিজেপির প্রথম সভাপতি ও প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক (জনতা পার্টির হয়ে) হরিপদ ভারতীর জন্মদিবসে শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার বিধানসভায় এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে রাজ্যে উচ্ছেদ অভিযান ও জবরদখল হটানো প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জবরদখল হটানোর কথা বলছেন। আপনি (মুখ্যমন্ত্রী) নিজে কালীঘাটে টালির নালার জমি জবরদখল করে বাড়ি সম্প্রসারণ করেছেম, মিটিং হল বানিয়েছেন। চলুন আমার সঙ্গে! ওই নালার এলাকা ১০ বছর আগে কী ছিল, এখন কী হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেই দত্তাবাদে নিকাশি বুজিয়ে বিক্রি করে সুজিত বসু কোটি কেটি টাকা করেছেন!’’ বিরোধী নেতার আরও মন্তব্য, ‘‘সুজিত বসু এখন চোর আর আপনি সাধু হয়ে গেলেন? এক যাত্রায় পৃথক ফল হয় না!’’ স্বল্প আয়ের মানুষকে যে ভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, তার মাসুল তৃণমূল কংগ্রেসকে দিতে হবে বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘বেহালার, বিধাননগরের ওই লোকেদের চোখের জল, রামপুরহাটের আতর্নাদে ভেসে যেতে হবে আপনাদের!’’
জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগের জবাবে তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘একেবারে অবান্তর কথা! আসলে নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে বিজেপির অন্দরে দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে। তা থেকে নজর ঘোরাতে এ বিজেপি নেতারা সব বলছেন।’’
উচ্ছেদ-প্রশ্নে শাসক দল ও মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছে কংগ্রেস ও সিপিএমও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিন বহরমপুরে বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কি জাদু জানেন? এক মাসের মধ্যে কোথায় ব্যবস্থা করবেন? আগে হকার ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা তরে তবে তো এ সব করবেন। পুলিশকে তোলা দিয়ে, গাল খেয়ে, একে-ওকে টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে হকারেরা চান না। তাঁরা বাধ্য হয়েছেন রাস্তায় বসে কাজ করতে। এঁরাই আপনার দলে চাঁদা দেয়, মিটিং-মিছিল করে।’’ প্রদেশ সভাপতির সংযোজন, ‘‘নিচু তলা থেকে যখন আপনার দলের নেতারা বলছেন এঁরা আমাদেরই লোক, তখন আপনি এক মাসের কথা বলছেন। টাকা আপনার দলই নিয়েছে। ভোটের পরে দুর্নীতির দুর্গন্ধকে ঢাকার জন্য এক মাসের নিদান দিয়েছেন!’’ কংগ্রেস বহরমপুর, কান্দি, লালবাগের মতো জায়গায় পুরসভার মাধ্যমে হকারদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করেছিল বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন অধীর। দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক করতে গিয়ে সুজন চক্রবর্তীও বলেছেন, ‘‘রামপুরহাটে আমাদের পুর-প্রতিনিধি হোক বা বোলপুরে সাধারণ মানুষ হোন, তাঁরা বুলডোজ়ারের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। জবরদখল হয়েছে, লুট চলছে, এটা কিছু ভোট হারানোর পরে মনে পড়ল? মানুষের যাতায়াতের বন্দোবস্ত যেমন করতে হবে, জীবিকার ব্যবস্থাও থাকতে হবে। মানুষ তো জানতে চাইবেন, হরিশ চ্যার্টার্জি স্ট্রিটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির চারপাশে যে সব দখল হয়ে আছে, সেগুলো ভাঙেননি কেন?’’
পুর-প্রতিনিধি থেকে শুরু করে পুলিশ-প্রশাসনের নীচের দিকের আধিকারিকদের ডেকে যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী ধমক দিচ্ছেন, তা তাঁর কাজ নয় বলেও এ দিন দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিব এবং বিভাগীয় মন্ত্রীদের মাধ্যমে তাঁর নির্দেশ পৌঁছে দেবেন। তাঁর কাজ নাকি ডেকে পাঠিয়ে এ সব বলা? মুখে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কথা বলেন। যেটা করছেন, সেটা কি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy