Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Susunia Hill

এভারেস্ট আরোহণের শতবর্ষে সাফাই অভিযান শুশুনিয়ায়

এভারেস্টের বুকে সেই প্রথম অভিযানের শতবর্ষ স্মরণে এ বার তাই পথে নামছেন বাঙালি পর্বতারোহীরা।

আবর্জনা সাফাই অভিযান চলবে এই শুশুনিয়া পাহাড়েই।

আবর্জনা সাফাই অভিযান চলবে এই শুশুনিয়া পাহাড়েই। ছবি: সংগৃহীত

স্বাতী মল্লিক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:২০
Share: Save:

টানা দশ সপ্তাহ ধরে প্রথম অভিযান চলেছিল বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের বুকে। বিশিষ্ট পর্বতারোহী জর্জ ম্যালোরি-সহ ব্রিটিশ অভিযাত্রী দল তিব্বতের দিক থেকে এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছনোর জন্য পথের অনুসন্ধান চালিয়ে গিয়েছিলেন। শেষে ‘নর্থ কল’ দিয়ে ম্যালোরি-সহ তিন জন অভিযাত্রী ৭০২০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছন। সেটা ছিল ১৯২১ সাল।

এভারেস্টের বুকে সেই প্রথম অভিযানের শতবর্ষ স্মরণে এ বার তাই পথে নামছেন বাঙালি পর্বতারোহীরা। তারই প্রথম ধাপ হিসেবে পুরুলিয়ার শুশুনিয়া পাহাড়কে জঞ্জালমুক্ত করার অভিযানে শামিল হচ্ছে কলকাতা এবং বাঁকুড়ার দু’টি পর্বতারোহণ ক্লাব। আজ, শুক্রবার এবং শনিবার— এই দু’দিন ধরে শুশুনিয়ার বুকে জমে থাকা জঞ্জাল এবং প্লাস্টিক সরাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে হাত লাগাবেন ওই পাহাড়িয়ারা।

কেন এই উদ্যোগ? বিশিষ্ট পর্বতারোহী মলয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এভারেস্টে প্রথম অভিযানের শতবর্ষ উপলক্ষে সারা বছর ধরেই পরিবেশ সংক্রান্ত নানা কাজ করব বলে ভেবেছিলাম। তারই প্রথম ধাপ শুশুনিয়া সাফাই অভিযান। কারণ, শুশুনিয়া হল এ রাজ্যে অ্যাডভেঞ্চারের আঁতুড়ঘর। ১৯৬৫ সাল থেকে এই পাহাড়েই বহু পর্বতারোহীর হাতেখড়ি হয়েছে। তাই শুরু করছি শুশুনিয়া থেকেই।’’

শুধু প্রথম অভিযানের শতবর্ষই নয়। এভারেস্টের বুকে অসামরিক বাঙালি হিসেবে প্রথম সফল সামিটের দশ বছর পূর্তি হয়েছে গত বছর। ২০১০ সালে বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গে পৌঁছেছিলেন প্রথম বাঙালি অসামরিক জুটি— বসন্ত সিংহরায় এবং দেবাশিস বিশ্বাস। কিন্তু গত বছর অতিমারির কারণে সেই উদ্‌যাপনে ভাটা পড়েছিল। চলতি বছরে অ্যাডভেঞ্চার-অভিযানের মাধ্যমে সেই কাজটাও করতে চাইছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে শুশুনিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের সচেতন করতে চান এভারেস্টার দেবাশিস। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু আবর্জনা সাফাই নয়, আরোহীদের কাছে শুশুনিয়ার গুরুত্ব কতটা, সেটাও মানুষকে বোঝাতে চাই। আমাদের পাহাড়ে যাওয়ার প্রথম ধাপ কিন্তু শুরু হয়েছিল এখান থেকেই। তাই শুশুনিয়া যে শুধু মোচ্ছব করার জায়গা নয়, সে সম্মানের দাবিও রাখে— সেই বার্তাও দিতে চাই।’’

এর আগে সান্দাকফু ট্রেকিং-পথে সাফাই অভিযান চালিয়ে কয়েকশো কেজি আবর্জনা, প্লাস্টিক এবং মদের বোতল পরিষ্কার করেছিল পর্বতারোহী দেবরাজ দত্তের নেতৃত্বাধীন একটি দল। পুরুলিয়ার শুশুনিয়াও সে রকমই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় সেখানেও জমে আবর্জনার পাহাড়। তাই শুশুনিয়াকে ভাল রাখতে মলয়-দেবাশিসদের ডাক দিয়েছিলেন পুরুলিয়ার বাসিন্দা, সত্তরোর্ধ্ব ঝড়ু দত্ত এবং নবীন পরাণ বাউড়ি। সেই ডাকে সাড়া দিয়েই এই সাফাই অভিযানে অংশ নিচ্ছেন আরোহীরা। সঙ্গে নিচ্ছেন প্রায় ২০০টি বস্তা, জঞ্জাল জড়ো করার জন্য। আর এই কাজে হাত লাগাবেন প্রায় ১২০-১৩০ জন। মলয়ের কথায়, ‘‘জড়ো করা আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলার প্রশ্নই নেই। স্থানীয় পুরসভার জঞ্জাল ফেলার এলাকায় নিয়ে গিয়ে সেগুলি ফেলা হবে। এই কাজের জন্য স্থানীয় বাসিন্দা, গ্রামের ছেলেমেয়েরাও হাত লাগাবেন। এমনকি, এই সময়ে ওখানে বেড়াতে যাচ্ছেন, এমন অনেকেও এই কাজে আমাদের সঙ্গী হতে চেয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mount Everest Cleaning Susunia Hill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy