হাই কোর্টে বিচারপতি মান্থার এজলাসের সামনে ধস্তাধস্তি আইনজীবীদের। ছবি: আইনজীবীদের সূত্রে পাওয়া।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটকে ঘিরে আইনজীবীদের মধ্যে যে সংঘাত, তা শেষমেশ গড়াল হাতাহাতিতে। কলকাতা হাই কোর্টের ১৩ নম্বর আদালতকক্ষ বন্ধ থাকা নিয়ে প্রতিবাদ জানান আইনজীবীদের একাংশ। তাঁরা জোর করে এজলাসে ঢুকতে গেলে বাধা দেন তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি। তৃণমূলের মহিলা আইনজীবীদের একাংশ এজলাসের গেট বন্ধ করে দেন।
এই পরিস্থিতিতে নিজের এজলাস ছেড়ে উঠে যান প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবও। বন্ধ হয়ে যায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের শুনানি। প্রায় ১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে শুনানি বন্ধ থাকে বিচারপতি মান্থার এজলাসে। তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের সঙ্গে হাতাহাতি করে জোর করে এজলাসের দরজা খুলে দেন আইনজীবীদের অন্য একটি অংশ। ১ ঘণ্টা পর এজলাসের দরজা খুলে দেন তাঁরা। ২ ঘণ্টা পরে এজলাসে এসেও বেরিয়ে যান বিচারপতি মান্থা। কারণ ১০০টিরও বেশি মামলায় রাজ্যের পক্ষের আইনজীবীরা অনুপস্থিত ছিলেন। ৪০০টিরও বেশি মামলা ডেকেও শুনানি হল না সোমবার। এই পরিস্থিতিতে সব মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয়। এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান বিচারপতি।
অপর দিকে কলকাতা হাই কোর্ট চত্বরে বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে একাধিক পোস্টার পড়তে দেখা যায়। তবে কারা এই পোস্টার দিয়েছেন, তা জানা যায়নি। পোস্টারেও কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের নাম উল্লেখ করা নেই।
সোমবার সকালের এই পরিস্থিতি নিয়ে আগেই উদ্বেগপ্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। এই বিক্ষোভ এবং হাতাহাতির ঘটনার পর নিজের এজলাসে শুনানি বন্ধ করে জরুরি বৈঠকে বসেছেন তিনি। বৈঠকে রয়েছেন হাই কোর্টের অন্য বিচারপতিরাও।
সোমবার সকালেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসের বাইরে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের একাংশের অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। এজলাসের বাইরে গেট আটকে কোর্ট বয়কট করেন আইনজীবীদের একাংশ। এর ফলে স্তব্ধ হয়ে যায় বিচারপতি মান্থার বেঞ্চে বিচারপ্রক্রিয়া। এই বিক্ষোভের বিরোধিতা করেন কংগ্রেসের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। তিনি এ বিষয়ে বিচারপতি মান্থাকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেন। এজলাস ছেড়ে উঠে যান বিচারপতি মান্থা।
১৩ নম্বর আদালত কক্ষে বিচারপতি মান্থাকে বয়কট করা নিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য। কী ভাবে এক জন বিচারপতির এজলাসের বাইরে ধর্না দিয়ে প্ল্যাকার্ড তুলে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে, সেই ছবি তুলে ধরেন আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রধান বিচারপতির এজলাসে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে নিন্দা প্রকাশ করেন। তাঁর আবেদন, বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিকে ডেকে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি তোলা হোক।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এ প্রসঙ্গে বলেন, “এটা উচিত নয়। সব তথ্যপ্রমাণ নিয়ে আসুন। বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিকে ডেকে পাঠাচ্ছি। এই ঘটনা হওয়া উচিত নয়। বিষয়টি আমরা দেখেছি।” প্রধান বিচারপতি এই ঘটনায় বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে ডেকে পাঠান। তাঁদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান তিনি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বিচারপতির এজলাস কী ভাবে বয়কট করা যেতে পারে?”
এজি এসে প্রধান বিচারপতিকে জানান, তিনি সবেমাত্র বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এর পরই প্রধান বিচারপতি বলেন, “কেন বোঝেন না, এই সব সুপ্রিম কোর্টে গেলে সমস্যা তৈরি হবে। ছবি, ভিডিয়ো সব রয়েছে। কেন সমস্যা ডেকে আনছেন?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy