Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বড়মার নামে চিঠি নিয়েও তরজা

বড়মাকে নিয়ে টানাপড়েন চলছেই মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে। ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে তাঁর মা বীণাপানিদেবী (বড়মা) তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন বলে দাবি করেছেন রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য মঞ্জুল। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য পাল্টা দাবি, মঞ্জুলকে দলে না ফেরানোর অনুরোধ জানিয়েই বড়মা চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রীকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০৩:২৩
Share: Save:

বড়মাকে নিয়ে টানাপড়েন চলছেই মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে।

ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে তাঁর মা বীণাপানিদেবী (বড়মা) তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন বলে দাবি করেছেন রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য মঞ্জুল। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য পাল্টা দাবি, মঞ্জুলকে দলে না ফেরানোর অনুরোধ জানিয়েই বড়মা চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রীকে।

কী বলছেন বড়মা নিজে?

এ দিন গাইঘাটার ঠাকুনগরের ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ছিয়ানব্বই বছরের বৃদ্ধা বড়মা ঘরে বসে। অশক্ত শরীরে তিনি আদৌ নিজের হাতে চিঠি লিখলেন কী করে? অস্ফুট স্বরে বললেন, ‘‘আমার শরীর ভাল নেই। কোনও কথা বলব না।’’

মঞ্জুলের দাদা কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের মৃত্যুতে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে কয়েক মাস আগে উপ নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন কপিলের স্ত্রী মমতা ঠাকুর। ভোটের ঠিক আগে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন মঞ্জুল। তাঁর বড় ছেলে সুব্রতও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়ান। ভোটে হেরে সুব্রত বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। মঞ্জুল আবার ফিরতে চাইছেন তৃণমূলে।

দলীয় সূত্রের খবর, নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ২০ এপ্রিল মঞ্জুল চিঠি দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এ বার মঞ্জুলের দাবি, মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপানিদেবীও ছোট ছেলের হয়ে সওয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। মঞ্জুলের ছোট ছেলে শান্তনু দাবি করেছেন, চিঠিতে বড়মা জানিয়েছেন, ‘মঞ্জুল তৃণমূল ছেড়ে ভুল করেছে। ও এখন অনুতপ্ত। জীবিত অবস্থায় যদি দেখি মঞ্জুল ফের দলে ঢুকেছে, তা হলে শান্তি পাব।’

কিন্তু মঞ্জুলকে দলে ফেরানোর ব্যাপারে ঘোর আপত্তি আছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একটি অংশের। জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শুক্রবার বলেন, ‘‘বড়মার লেখা চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে। চিঠিতে বড়মা অনুরোধ করেছেন, মঞ্জুলকে যেন মুখ্যমন্ত্রী ফের দলে ফিরিয়ে না নেন।’’ তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, ওই চিঠিতে বড়মা মুখ্যমন্ত্রীকে লিখেছেন, ‘ও শুধু তোমার সঙ্গে নয়, গাইঘাটা ও রাজ্যের মানুষের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’ তবে বড়মা আদৌ কাউকে কোনও চিঠি লিখেছেন, এমন তথ্য তাঁর জানা নেই বলে দাবি সাংসদ মমতা ঠাকুরের।

বড়মার সুপারিশেও মঞ্জুলের দলে ফেরা সহজ হবে কি না, সে প্রশ্ন অবশ্য রয়েই যাচ্ছে। শুক্রবার বিকেল ৫টা ৭ মিনিট নাগাদ ছোট ছেলে শান্তনুকে সঙ্গে নিয়ে নবান্নে আসেন মঞ্জুল। ভিআর গে়ট দিয়ে ঢুকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে যান। সেখানে ভিজিটর্স রুমে বসে থাকেন দীর্ঘ ক্ষণ। ৫টা ৫৫ মিনিটে বেরিয়ে যান। পুলিশ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি।

কী হল নবান্নে? টেলিফোনে প্রশ্ন শুনে কোনও উত্তর দেননি তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE