Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

কর্তৃত্ব রাখতেই টানা লড়াই, পুলিশ নিধিরাম

তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, বিজেপির লোকেরাই একতরফা বোমাবাজি, দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করছে। বিজেপি অভিযোগ মানেনি।

স্বজনহারা: নিহত ধর্মবীর সাউয়ের শোকার্ত পরিজন। (ইনসেটে) উদ্ধার হওয়া পিস্তল। বৃহস্পতিবার কাঁকিনাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র

স্বজনহারা: নিহত ধর্মবীর সাউয়ের শোকার্ত পরিজন। (ইনসেটে) উদ্ধার হওয়া পিস্তল। বৃহস্পতিবার কাঁকিনাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকিনাড়া শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৯ ০৩:৩৬
Share: Save:

তৃণমূল দুষছে বিজেপিকে। বিজেপি তৃণমূলকে।

দিন কুড়ির মধ্যে দু’জন পুলিশ কমিশনারকে বদলানো হল। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া এলাকায় কোন পথে শান্তি ফিরবে, তা ভেবেই উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে পারছেন না। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারছে না। মানুষ বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন।

শুরু হয়েছিল ১৯ মে, ভাটপাড়া বিধানসভার উপ-নির্বাচনের দিন। সে দিন দুপুরে আচমকা ভাটপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় বোমাবাজি শুরু হয়ে যায়। লড়াইটা ছিল তৃণমূল বনাম বিজেপির। ২৩ মে ফল প্রকাশের পর থেকে সেই বোমাবাজি বাড়তে থাকে।

তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, বিজেপির লোকেরাই একতরফা বোমাবাজি, দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করছে। এলাকাছাড়া তৃণমূল-কর্মীরা। একাধিক দলীয় কার্যালয়ও বেদখল। বিজেপি অভিযোগ মানেনি। সেই সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠত। চলতি মাসের গোড়াতেই ব্যারাকপুরের পুলিশ সুপার সুনীলকুমার চৌধুরীকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় তন্ময় রায়চৌধুরীকে। বদলি করা হয় ডিসিপি (জ়োন-১) কে কান্ননকেও। কিন্তু গোলমাল থামল কই?

কিছু দিন আগেই ভাটপাড়ায় খুন হন মহম্মদ হালিম এবং মহম্মদ মুস্তাক। গত সপ্তাহে কাঁচরাপাড়ার কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ এবং গোলমাল পাকানোর চেষ্টা হলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পর দিন সেই মাঠেই পাল্টা সভায় বিজেপির অর্জুন সিংহ জানান, দলের কর্মীদের ধরা হলে তাঁরাও ছেড়ে দেবেন না। থানা ঘেরাও করা হবে।

তার পর থেকে গোলমাল আরও বাড়ে। কাঁকিনাড়া-ভাটপাড়া জুড়ে বেনজির বোমাবাজি শুরু হয়। লুটপাট, হামলাও চলতে থাকে। বুধবার সকালেও ভাটপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে গুলিবিদ্ধ হন এক তরুণ। আর বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্র কাঁকিনাড়ায় গুলিতে ফের জোড়া মৃত্যু। যার জেরে সন্ধ্যায় পুলিশ কমিশনারও বদল হল।

তবে পুলিশ যে কাউকে গ্রেফতার করেনি, তা নয়। তাতে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে বেছে বেছে তাদের দলের লোককেই গ্রেফতার করছে। তৃণমূলের অভিযোগ, কর্তৃত্ব কায়েম করতে এবং ভয় জিইয়ে রাখতে পরিকল্পনা মতো এলাকা ধরে ধরে বোমাবাজি করছে বিজেপি। অর্জুনের দাবি, ‘‘আমার দলের লোকেরাই আক্রান্ত হচ্ছেন। দলের লোকেরাই গ্রেফতার হচ্ছেন। তৃণমূল রাজনৈতিক লড়াইয়ে না পেরে পুলিশ দিয়ে এ সব করছে। মানুষই প্রতিরোধ করছেন।’’ এলাকাবাসীর বক্তব্য, পুলিশ প্রথমেই কড়া হলে এমন ঘটত না। অনেকেরই ধারণা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এই অশান্তি হচ্ছে। কারা কেন করছে পুলিশ তা খুঁজে বের করুক, এই দাবিও উঠছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bhatpara Kankinara BJP TMC Clash Bhatpara Violence ভাটপাড়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy