নৈঃশব্দ্য ভাঙার আর্জি প্রতীকী ছবি।
পুরুষ ‘বসে’র যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য এবং অস্বস্তিকর দৃষ্টির অত্যাচার সইতে সইতে সহ্যের বাঁধ ভেঙেছিল মেয়েটির। শেষে অফিসে সবার সামনেই তার বিস্ফোরণ ঘটল। মেয়েটির চিৎকৃত প্রতিবাদের সামনে তখন ‘বস’ই কুঁকড়ে যাচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এমন একটি ভিডিয়ো দেখানো হল কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) ভারতীয় নারী নেটওয়ার্কে (আইডব্লিউএন)। ভিডিয়োটি দেখিয়েই বণিকসভাটির নারী নেটওয়ার্কের অন্যতম ভাইস চেয়ারপার্সন প্রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় কাজের জায়গায় নির্যাতিতাদের সঙ্কোচের বিহ্বলতা ঝেড়ে ফেলতে বললেন।
এই সরব হওয়া বা নিজের স্বর খুঁজে পাওয়ার তাগিদেই বণিকসভাটি এ দিন কাজের জায়গায় মেয়েদের হেনস্থার পশ আইন (প্রিভেনশন অব সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট) নিয়ে সচেতনতা-শিবিরের আয়োজন করে। তবে তাতে একতরফা ভাবে শুধু মেয়ে নয়, পুরুষ বা অন্যদের সমস্যার কথাও উঠে এসেছে। রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল হাইকোর্টের দুঁদে আইনজীবী কিশোর দত্তের কথায়, “নারী-পুরুষে বৈষম্য দূর করাতেই পশ আইন তৈরি হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী হিসেবে ভারত এই আইনটি রূপায়ণে দায়বদ্ধ। কিছু ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহারও ঘটে।” তাঁর পরামর্শ, “মেয়েদের উচিত তলোয়ার নয়, ঢাল হিসেবে এই আইনটির প্রয়োগ।” তবে একই সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মেয়ের কর্মক্ষেত্রে হয়রানির অভিজ্ঞতাও উঠে এসেছে। ব্রিটেনের একটি সমীক্ষাই বলছে, ৫২ শতাংশ মেয়ে কাজের জায়গায় যৌন হেনস্থার শিকার। পাঁচ জনের এক জন অভিযোগ করলেও, শতকরা ৮০ ভাগই অভিযোগ নিষ্পত্তিতে সন্তুষ্ট নন। এ দেশে বিশাখা মামলার রায়ের নির্দেশিকায় ২০১৩য় পশ আইন হয়েছে। তার ফলে ১০ জন কর্মচারীর অফিসও অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি (আইসিসি) গড়তে বাধ্য। কিন্তু এ দেশে এত খুঁটিনাটি সমীক্ষা নেই। কলকাতার আর এক পোড়খাওয়া আইনজীবী (২০২১এর ফোর্বস তালিকাভুক্ত) রামিয়া হরিহরণ বলছিলেন, “স্পর্শ না করে মন্তব্য বা মেসেজও যৌন হেনস্থা বলে ধরা হতে পারে। তবে তিন মাসের মধ্যে অভিযোগ করতে হবে। এই অপরাধে চাকরি যেতেও পারে।” তাঁর কথায়, “কোনও অফিস চাইলে পুরুষদেরও এই রীতির রক্ষাকবচের আওতায় আনতেই পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy