Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Chokher Alo

হাজার টাকায় চক্ষু শিবির! ক্ষুব্ধ কর্মীরা

তাঁদের বক্তব্য, এই প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ অপ্রতুল হওয়ায় দায়িত্ব সামলানোর ক্ষেত্রে সমস্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বাড়ছে কর্মীদের একাংশের ক্ষোভও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৩১
Share: Save:

শুরুর দিকে তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু এখন ‘চোখের আলো’ প্রকল্পে শিবিরের আয়োজন করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। টাকা কম বলেই যথাসময়ে ঠিকঠাক কাজ করা যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন এই কর্মসূচিতে যুক্ত কর্মী-অফিসারেরা। তাঁদের বক্তব্য, এই প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ অপ্রতুল হওয়ায় দায়িত্ব সামলানোর ক্ষেত্রে সমস্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বাড়ছে কর্মীদের একাংশের ক্ষোভও।

জেলা-ভিত্তিক কর্মী-অফিসারদের অনেকেই জানাচ্ছেন, কোনও কোনও শিবিরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে কমবেশি এক হাজার টাকা। সেই টাকাতেই এলাকা ধরে ধরে মাইকে প্রচার, শিবির তৈরি, শিবিরে কর্মী-অফিসারদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। শিবির আট-ন’ঘণ্টা ধরে চলতে থাকায় সেখানকার পাঁচ-ছ’জন কর্মী-অফিসারের খাওয়ার ব্যবস্থা করাও জরুরি। ওই সামান্য বরাদ্দে এত আয়োজন করতে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের খবর। কর্মী-অফিসারদের একাংশের অভিযোগ, টাকা কম আসায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁদের নিজেদেরই যাতায়াতের ব্যবস্থা করে নিতে হচ্ছে।

উত্তরবঙ্গের এক অফিসার জানান, চক্ষু সংক্রান্ত মেডিক্যাল টেকনিশিয়ানদের যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা না-থাকায় তাঁদের নিজেদেরই দূরবর্তী এলাকায় পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। পরপর দু’দিন দু’জায়গার শিবিরে যেতে হলে সমস্যা আরও বেড়ে যাচ্ছে। “এক দিন ১৩০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ক্যাম্প করে বাড়ি ফিরেছি। পরের দিনেই আবার ভিন্ন গন্তব্য। যেতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু ন্যূনতম একটা গাড়ি থাকলে পরিষেবা দিতে সুবিধা হত,” বলেন এক টেকনিশিয়ান।

‘চোখের আলো’ কর্মসূচি পাঁচ বছরের। তা সত্ত্বেও জানুয়ারি শেষ হওয়ার আগেই যথাসম্ভব বেশি মানুষকে এই পরিষেবার আওতায় আনতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। ৫ জানুয়ারি চালু হওয়া এই কর্মসূচিতে ১৮ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন শিবিরে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষকে চোখের চিকিৎসা দেওয়া গিয়েছে প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে। এ বার চলতি মাসেই রাজ্যের সব ব্লকে চোখের আলোর শিবির করার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। ফলে জেলায় জেলায় এই কর্মসূচিতে যুক্ত অফিসার- কর্মীদের উপরে চাপ আরও বাড়ছে।

সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, এ-পর্যন্ত রাজ্যের ৪২১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে এবং ৬৬টি আপার প্রাইমারি হেলথ সেন্টার মিলিয়ে ৪৮৭টি শিবির গড়া হয়েছে। সেই সব শিবিরে গত দু’সপ্তাহে দুই লক্ষাধিক মানুষের চোখের চিকিৎসা করা হয়েছে। শিবিরে চোখ দেখিয়ে চশমা পেয়েছেন অন্তত ৫২ হাজার মানুষ। প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, ৩৫ হাজার মানুষের হাতে চশমা তুলে দেওয়া হবে শীঘ্রই। এ-পর্যন্ত ১৬ হাজার রোগীকে ছানি কাটানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিভিন্ন শিবিরের চক্ষু-বিশেষজ্ঞেরা। ইতিমধ্যে হাজার চারেক রোগীর ছানি কাটা হয়েছে। চলতি মাসের শেষে রাজ্যের ৩৪১টি ব্লকেই চোখের আলোর শিবির গড়বে সরকার। শিবির-সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি তখন আরও এক লক্ষ মানুষকে চোখের চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

“মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে যে-নির্দেশ দিয়েছেন, স্বাস্থ্য দফতর তা মেনে চলবে,” বললেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Eye Care Chokher Alo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy