প্রতীকী ছবি।
দেড় বছর পরে স্কুল খোলার চেয়েও আনন্দে অন্য বাচ্চারা যেখানে আপ্লুত, সেখানেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের স্কুলগুলির শিক্ষকদের কপালে। তাঁরা বলছেন, স্কুল খোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ঠিকই। তার সঙ্গে এই শিশুদের নতুন করে স্কুলের পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা পড়াশোনা এবং মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে অনেকটাই নির্ভরশীল স্কুলের উপর। স্পেশ্যাল এডুকেটররা যে ভূমিকা নেন, তা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়া বাবা-মায়ের পক্ষেও সম্ভব নয়। কলকাতার ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রির ডিরেক্টর প্রদীপ সাহা বলেন, “এই শিশুদের অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ যেহেতু অন্যরকম, তাই হঠাৎ করে স্কুলে যাওয়ার চেনা ছন্দ হারিয়ে যাওয়ার প্রভাব ওদের উপর পড়েছে। এর ফলে ছোট বয়সে অবসাদও হতে পারে।”
কলকাতার স্পর্শ স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজ়ম স্কুল কর্তৃপক্ষের এক সদস্য মিঠুন দত্ত অবশ্য উদ্বিগ্ন বাচ্চাদের স্বাস্থ্য নিয়েও। বলেন, ‘‘স্কুল খোলার আগে ছোটদের টিকাকরণ সম্পন্ন হলে অনেকটা নিশ্চিন্ত হতাম। কারণ বিশেষ শিশুরা করোনা আক্রান্ত হলে সমস্যা বোঝাতেও পারে না, নিজেরাও বুঝতে পারে না। ওদের আইসোলেশনে রাখাও অসম্ভব।” স্কুল খোলার পরেও ওরা কতটা করোনাবিধি মেনে চলতে পারবে? উদ্ভাস চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের স্পেশ্যাল এডুকেটর কাকলি কর বলেন, “সামাজিক দূরত্বের বোধ ওদের বেশির ভাগেরই নেই। স্কুল না খুললে বোঝাই যাচ্ছে না ওরা ঠিক কী প্রতিক্রিয়া দেবে!”
ভাবনা চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের অরুণাশিস অধিকারীর মতে, “স্কুল সম্পূর্ণ করোনাবিধি মেনেই খোলা হবে, তবে বাচ্চারা যে সব সময় মাস্ক পরে থাকবে, এই নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। এত দিন পরে স্কুলের পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পক্ষে সহজ হবে না। তাই সব স্কুলই শুরুতে দু’-এক ঘণ্টার জন্য ক্লাসের কথা ভাবছে। রয়েছে বাচ্চাদের ভাগ করে স্কুলে আনার পরিকল্পনাও। বাচ্চাদের ফিরিয়ে আনার সব রকম উদ্যোগও নিচ্ছেন তাঁরা। মিঠুনবাবু বলেন, “এই শিশুদের যে কোনও বিষয়ে অনেক আগে থেকে প্রস্তুত করতে হয়। স্কুল খোলার কথাও সোশ্যাল স্টোরির মাধ্যমে বোঝাতে হবে। প্রাথমিকভাবে নতুন আচরণগত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।” কাকলিদেবীর কথায়, “অনেক বাচ্চা বাড়ির বাইরেই বেরোতে চাইছে না। অনলাইন ক্লাসে যে বিষয়গুলোতে কিছুটা উন্নতি করাতে পেরেছিলাম, সেগুলোও হয়তো স্কুলে এসে করবে না।” তবে শিশুরা স্কুলে ফিরুক সেটাই চাইছেন সকলে। প্রদীপবাবুও বলেন, “প্রাথমিকভাবে সমস্যা হলেও, ওরা স্কুলে গিয়েই ভাল থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy