আক্রান্ত সরিফা ফকির। — নিজস্ব চিত্র ।
‘লড়াই’ বেঁধেছিল পুলিশের সঙ্গে জোটের কর্মী-সমর্থকদের।
পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে তা দেখতে গিয়ে রক্তাক্ত হয়ে বাড়ি ফিরল জয়নগরের বছর আটেকের সরিফা ফকির। পুলিশের লাঠি পড়েছে তার পিঠে। মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ছেঁচড়ে গিয়েছে তার মুখ।
ভোট পরবর্তী হিংসা এখনও অব্যাহত। রবিবার তার জেরেই তেতে ওঠে জয়নগরের হাসিমপুর মোড় এলাকা। শাসকদলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলে ওই মোড় অবরোধ করেছিলেন জোট সমর্থকেরা। পুলিশ সেখানে গেলে জোটকর্মীরা তাদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ইটের ঘায়ে ওসি অর্ধেন্দুশেখর দে সরকার-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মী জখম হন। দু’জন পুলিশকর্মীর মাথা ফাটে। এর পরেই পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তাতেই সরিফা এবং কয়েক জন জখম হন। স্থানীয় পদ্মেরহাট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় সরিফাকে।
সরিফা চিকিৎসকদের জানিয়েছে, পুলিশকাকুরা তাকে মেরেছে। তার পরে সে মাটিতে পড়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানান, মেয়েটির মুখের কয়েক জায়গার চামড়া উঠে গিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। ওষুধ দেওয়া হয়েছে। সরিফার কাকা রমজান ফকির বলেন, ‘‘পুলিশের লাঠি পিঠে পড়ার পর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল সরিফা। রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। তারপরই মুখ ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা ওষুধ দিয়েছেন।’’
শাসক দলের নির্দেশেই পুলিশ লাঠি চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জোটের নেতারা। শাসক দল অভিযোগ মানেনি। লাঠি চালানো নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জখমদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ বহড়ু এলাকায় বিজয়-মিছিল করে তৃণমূল। কুলপি রোড ধরে ওই মিছিল যখন এগোচ্ছিল, তখন হাসিমপুর মোড়ে একটি দোকানে কয়েক জন জোট সমর্থক বসেছিলেন। মিছিল থেকে তৃণমূলের কিছু ছেলে জোট সমর্থকদের সবুজ আবির মাখিয়ে মারধর করে চলে যায় বলে অভিযোগ। এর পরেই হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বহড়ু-শ্রীক্ষেত্র পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের মতিবুর রহমান লস্করের নেতৃত্বে অবরোধ হয়। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হয়ে যায় গোলমাল।
জয়নগর কেন্দ্রের জোটপ্রার্থী ছিলেন কংগ্রেসের সুজিত পাটোয়ারি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ছেলেরা শাসক দলের দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হল। পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করে, আমাদের কোনও কথা না শুনে লাঠিপেটা করল। পুলিশের মার থেকে রেহাই পায়নি শিশু-মহিলাও।’’ জয়নগর টাউন তৃণমূল সভাপতি প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বহডু়র গোলমালের কথা শুনেছি। ঘটনাটি কী ভাবে ঘটল দেখা হচ্ছে।’’
কিন্তু এই গোলমালে একটি শিশুর উপরে পুলিশ কেন লাঠি চালাল তার কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy