মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
সরকারি নথিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন ৫ জানুয়ারি। গত রবিবার সেই তারিখ মেনেই মমতাকে সমাজমাধ্যমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। জেলায় জেলায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাও দিদির জন্মদিন উদ্যাপনে কেক কেটেছিলেন। ৭২ ঘণ্টা কাটার আগেই জন্মদিন নিয়ে তাঁর পুরনো বক্তব্য আবার জানিয়ে দিলেন মমতা। পাশাপাশিই জানিয়ে দিলেন, সরকারি শংসাপত্রে তাঁর বয়স পাঁচ বছর বাড়িয়ে দেখানো রয়েছে।
নথি অনুযায়ী মমতার জন্ম ১৯৫৫ সালে। সেই অনুযায়ী তিনি ৭০ পার করেছেন। কিন্তু দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাক্ষী রেখে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বয়সের গন্ডগোলের পুরনো বক্তব্য জানিয়েছেন। মমতার বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁর বয়স এখন ৬৫ বছর। উল্লেখ্য, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, সব পেশার মতো রাজনীতিতেও অবসরের বয়স থাকা উচিত। সেই বয়স কখনওই ৬৫-র বেশি হওয়া উচিত নয়। মমতার দাবি অনুযায়ী, অভিষেক বর্ণিত বয়সের ‘ঊর্ধ্বসীমা’ সবে ছুঁয়েছেন তিনি। যদিও অভিষেক এ-ও উল্লেখ করেছিলেন, সব কিছুতেই ‘ব্যতিক্রম’ থাকে। তেমনই রাজনীতিতে বয়সের ঊর্দ্ধসীমার ক্ষেত্রেও রয়েছে। মমতাকে তিনি সেই ব্যতিক্রমের তালিকাতেই রেখেছিলেন। যেমন রেখেছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। তবে মমতা যখন বুধবার নিজের বয়স ৬৫ বলে জানিয়েছেন, তখন থেকে তৃণমূলের অন্দরের ‘ওয়াকিবহাল’রা খানিক হালকাচালে হলেও অভিষেকের বক্তব্যের অবতারণা করছেন। তবে পাশাপাশিই তাঁরা এটাও জানাতে ভুলছেন না যে, মমতা আদৌ তৃণমূলের ‘সেনাপতি’র বক্তব্য মাথায় রেখে কথাটা বলেননি। কারণ, মমতা নিজেই প্রকাশ্যে একাধিক বার বলেছেন, ‘‘বয়স একটা সংখ্যামাত্র!’’
রাজ্য সরকারের শিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে গত ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল ‘ছাত্র সপ্তাহ’ পালনের অনুষ্ঠান। বুধবার তার সমাপ্তি অনুষ্ঠান ছিল ‘ধনধান্য’ সভাগৃহে। সেখানেই মমতা তাঁর বয়স এবং জন্মদিনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আসল বয়সটা লুকিয়ে থাকে। নকল বয়সটা, সার্টিফিকেটের বয়সটা মানুষ জেনে যায়। আমরা যারা বাড়িতে জন্মেছি, হোম ডেলিভারি, তাদের এটা সমস্যা। আজকে দাদা সামনে আছে। তাই ওকে সাক্ষী রেখে কথাগুলো বললাম।’’ মমতা এ-ও বলেন, ‘‘আমার বয়স পাঁচ বছর বাড়ানো আছে! ‘একান্তে’ বইতে আমি লিখে দিয়েছি। অনেক দিন আগে।’’
ওই অনুষ্ঠানে সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা ফুটবল দলের সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চে ছিলেন মমতার দাদা তথা আইএফএ সভাপতি অজিত। বক্তৃতার প্রায় গোড়াতেই দাদাকে উঠে দাঁড়াতে বলেন মমতা। পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘জন্মদিনের দিনটা আমার মোটেই পছন্দকর নয়। ওটা সার্টিফিকেটের বয়স। ওটা বাবা-মা করে দিয়ে গেছে। আমি জানতামও না। যখন কলেজে পড়ি, তখন দাদা আমাকে একদিন বলল, তুই কি জানিস বাবা তোর বয়স কী করে দিয়েছে? সার্টিফিকেটে তোর আর আমার বয়সে ছ’মাসের ডিফারেন্স (ফারাক)। আমি শুনে বললাম দারুণ!’’
ধর্ম, পদবি, নাম— কোনও কিছুতেই যে তাঁর হাত ছিল না, বক্তৃতায় সে কথাও উল্লেখ করেন মমতা। পাশাপাশি বলেন, ‘‘এই নামটাও আমার পছন্দ নয়।’’ সরকারি শংসাপত্রে তাঁর জন্মতারিখ যে ‘ভ্রান্ত’, এ কথা মমতা আগেও বলেছেন। কয়েক বছর আগে এ-ও জানিয়েছিলেন যে, তাঁর মা তাঁকে বলেছিলেন, দুর্গাপুজোর অষ্টমী তিথিতে তাঁর জন্ম। তবে তাঁর বয়স যে পাঁচ বছর বাড়ানো রয়েছে, তা সম্ভবত প্রকাশ্য মঞ্চে এই প্রথম জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy