চালু হল পরীক্ষামূলক রেফারাল ব্যবস্থা। নিজস্ব চিত্র
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা বন্ধ করতে এবং রোগী স্বার্থে সুনির্দিষ্ট ভাবে কেন্দ্রীয় রেফারাল পদ্ধতি চালুর দাবি তুলেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের দশ দফা দাবির মধ্যে থাকা সেই বিষয়টিতে পদক্ষেপ করল স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে কেন্দ্রীয় রেফারাল পদ্ধতি চালু করা হল। যদিও, ওই ব্যবস্থাপনাতে এখনও কিছু ফাঁক থেকে গিয়েছে, দাবি জুনিয়র চিকিৎসকদের। তাঁদের কথায়, ‘‘আমাদের দাবি মতো ব্যবস্থাটি চালু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু যে খামতিগুলি রয়েছে, আশা করি পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সরকারও সেগুলি বুঝতে পারবেন।’’
দশ দফা দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’। সরকার যাতে অবিলম্বে সেই সমস্ত দাবি পূরণ করেন, তার জন্য শুরু হয়েছে আমরণ অনশনও। যদিও রাজ্যের তরফে বার বারই দাবি করা হয়েছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি ও প্রস্তাব মতো বেশ কয়েকটি বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তারই একটি এই কেন্দ্রীয় রেফারাল সিস্টেম (এক সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীকে অন্য সরকারি হাসপাতালে পাঠানোর পদ্ধতি)। এই ব্যবস্থাপনায় রোগীকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো হলেও, শয্যা না থাকার কারণে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে হয়রানি হতে হবে না।
পরীক্ষামূলক ভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলায় এ দিন থেকে ওই কেন্দ্রীয় রেফারাল পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলক ভাবে দু’সপ্তাহ চলার পরে ওই ব্যবস্থাপনা গোটা রাজ্যে চালু করা হবে। সোনারপুরের হাসপাতাল থেকে এক রোগীকে এই পদ্ধতির মাধ্যমেই এ দিন এম আর বাঙুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ওই রোগীকে যে রেফার করা হচ্ছে, সেটি অনলাইনের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছে যায় এম আর বাঙুরে। সেই মতো টালিগঞ্জের ওই হাসপাতালে শয্যা ও ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখা হয়। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, এই ব্যবস্থাপনায় কোন হাসপাতালে কত শয্যা খালি রয়েছে, তা-ও জানা যাবে।
ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে ‘টাইপ-এ’ (মহকুমা, স্টেট জেনারেল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল) চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে রোগীকে রেফার করা যাবে। প্রয়োজনে ‘টাইপ-বি’ (জেলা ও মেডিক্যাল কলেজ) চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেও সরাসরি রেফার করা যাবে। তবে, এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, যে হাসপাতালে প্রথমে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হবে, সেখানে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করে কিছুটা স্থিতিশীল করে, প্রয়োজন বুঝে রেফার করতে হবে। আর, সেটি করার সময় অনলাইনে রেফারের বার্তা পৌঁছে যাবে অন্য হাসপাতালে। সেখান থেকে বার্তা গ্রহণের উত্তরও পাঠাতে হবে। যদি আধ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর না আসে, তা হলে ধরে নেওয়া হবে যে, রেফারের বার্তা সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল গ্রহণ করেছে। আর যদি বাতিল করা হয়, সেটিতেও উপযুক্ত কারণ জানাতে হবে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে, ‘টাইপ-বি’-তে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল ও এসএসকেএমকে রাখা হয়েছে।
আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার অবশ্য বলেন, ‘‘এই সিস্টেমে আমাদেরও কিছু এসওপি আছে। কিন্তু সরকার নিজের মতো করে করেছে। তবুও দেখা যাক। তবে সমস্যা মিটবে বলে মনে হচ্ছে না।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ধরা যাক মাথায় আঘাতের কোনও রোগীকে রেফার করা হচ্ছে। সেখানে শুধু রেফার হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা আছে কি না, জানলেই হবে না। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে ওই চিকিৎসার পরিকাঠামো আছে কি না, সেটাও সিস্টেমে থাকতে হবে। দেবাশিস আরও বলেন, ‘‘জানতে পারছি, চিকিৎসকদেরই পুরো দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। তা করলে হবে না। সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট ভাবে কন্ট্রোল রুম করে, কর্মী রাখতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy