তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে নিয়ে এ বারে তৎপর এনআইএ, বিএসএফ এবং আয়কর দফতরও। ইডি সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ ও ইডির ডিরেক্টর রাহুল নবীন বৈঠক করে শহর ছাড়ার পরেই শাহজাহান সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। কিন্তু ঘটনার পাঁচ দিন পরেও প্রশ্ন, শাহজাহান কোথায়? ঘটনাচক্রে, বুধবারই সন্দেশখালি ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সিদ্দিক মোল্লা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে গত রবিবারই ‘দাদার’ দেখা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ কি সেই এলাকায় তদন্তে গিয়েছে? বসিরহাট পুলিশ জেলার কর্তারা এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। পুলিশ সুপার জ়বি থমাস কে এ দিনও ফোন ধরেননি। মেসেজের উত্তর মেলেনি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দিন দুয়েক আগেই দাবি করেন, সন্দেশখালির বেড়মজুর ১, ২ পঞ্চায়েত এলাকার আশপাশে ঘোরাফেরা করছেন শাহজাহান। সিদ্দিক এ দিন বলেন, “রবিবারই শাহজাহান আমার বাড়ির সামনে দিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে গিয়েছিলেন। আমার সঙ্গে কথাও হয়েছে। সন্দেশখালি বিধানসভার মধ্যেই রয়েছেন উনি। যে হেতু উনি এই বিধানসভা কেন্দ্রে দলের আহ্বায়ক, তাই সাংগঠনিক কাজ করছেন সন্দেশখালিতে বসেই।’’
শাহজাহানকে নিয়ে পুলিশ যখন ‘সেই তিমিরে’, সেই সময়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি তৃণমূল নেতাকে ঘিরে জাল গোটাতে তৎপর হয়ে উঠেছে। ইডি সূত্রের দাবি, রেশন দুর্নীতি-সহ রাজ্যের অন্য সব দুর্নীতির টাকা হাওলার মাধ্যমে বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছে। তার সঙ্গে শাহজাহানেরও যোগ রয়েছে। ইডির এক কর্তার কথায়, ‘‘এ সবই এনআইএ-র তদন্তের বিষয়। তাই তারাই এ সব খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে।’’
প্রাথমিক অনুসন্ধানে শাহজাহান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির সূত্র পাওয়া গিয়েছে বলেও ইডি সূত্রের দাবি। সূত্রটি জানাচ্ছে, আয়কর দফতরকে ওই সব বিষয় খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, শাহজাহানের বাংলাদেশে ব্যবসা ও সম্পত্তি রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। শাহজাহান সীমান্তবর্তী এলাকায় যাচ্ছেন কি না বা সীমান্ত পেরিয়ে গিয়েছেন কি না, তা দেখার দায়িত্ব বর্তেছে বিএসএফের উপরে।
এনআইএ-র একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যের এলাকায় অনুপ্রবেশের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যকলাপের ঘটনা আগেও ঘটেছে। সেই অনুপ্রবেশকারী এবং রোহিঙ্গাদের ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ নথিপত্র তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। জাল নোট, মাদক এবং সোনা পাচারের একাধিক মামলায় প্রভাবশালী যোগ আছে কি না, তাই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ফলে ওই এলাকা এমনিতেই গোয়েন্দাদের আতশ কাচের নীচে রয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, ন্যাজাট থানা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও কোনও এলাকাতেও ঘোরাফেরা করতে পারেন শাহজাহান। তবে টানা এক জায়গায় থাকছেন না। জায়গা বদল করছেন ঘন ঘন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বসিরহাট পুলিশ জেলার এক কর্তার দাবি, শাহজাহানকে গ্রেফতারের নির্দেশ এখনও আসেনি উপরমহল থেকে। সূত্রের দাবি, শুক্রবারের পর থেকে শাহজাহানের সরবেড়িয়া আগারহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। তবে তা জানাজানি হয়ে যায়। এর পর থেকে জিয়াউদ্দিনও বেপাত্তা বলে পুলিশের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy