ছবি: সংগৃহীত
হাতি, গন্ডার ছাড়া অন্য সমস্ত তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের সুমারির তোড়জোড় শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গে। ১২-১৪ মার্চ টানা তিন দিন উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার বনাঞ্চলে ওই তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের সুমারি হবে। এ জন্য সুকনা, মূর্তি ও মাদারিহাট এলাকায় বিভিন্ন এলাকার বনকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়ান ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট ও বন দফতরের উদ্যোগে ওই প্রশিক্ষণ হয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকার কর্মীদের প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি চলছে। সুমারিতে সাহায্য নেওয়া হবে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার।
বন দফতরের একটি সূত্রের দাবি, উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে আগে বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্ন তৃণভোজী বন্যপ্রাণীর গণনা হয়েছে। তবে এ বারই প্রথম বিস্তীর্ণ এলাকায় একযোগে এমন সুমারি হতে চলছে। এতে উত্তরের একাধিক জঙ্গলের খাদ্য, খাদকের ভারসাম্য, খাদ্য শৃঙ্খলের মতো নানা বিষয়ের তথ্য উঠে আসবে। প্রয়োজনে ওই সুমারির হিসেব দেখে এলাকা ভিত্তিক পদক্ষেপ করার সুবিধা হবে। বন দফতরের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমীদের অনেকেই।
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের মধ্যে প্রায় চার বছর অন্তর হাতি সুমারি করা হয়। গন্ডারের গণনা হয় সাধারণত প্রতি দু’বছরের ব্যবধানে। সে জন্য ওই দু’টি তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের সুমারির আওতায় রাখা হচ্ছে না। কিন্তু এ ছাড়াও উত্তরের বিস্তীর্ণ এলাকার জঙ্গলে প্রচুর বাইসন, সম্বর-সহ নানা প্রজাতির হরিণ রয়েছে। এক সময় বক্সা সহ একাধিক জঙ্গলে দেখা মিলত প্রচুর সংখ্যক বুনো মোষের। এ বারের সুমারিতে ওই রকম সমস্ত তৃণভোজীরা কত সংখ্যায় রয়েছে তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ বলেন, “হাতি, গন্ডারের সুমারি নির্দিষ্ট বছরের ব্যবধানে হয়ে থাকে। এ ছাড়া অন্য প্রজাতির তৃণভোজীরাও বিভিন্ন জঙ্গলে রয়েছে। কোথায় ওই বন্যপ্রাণীরা কত সংখ্যায় আছে তা জানলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুবিধে হবে।”
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার সমস্ত বনাঞ্চল তো বটেই, লাগোয়া একাধিক বনাঞ্চলেও সুমারির প্রস্তুতি রয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (পূর্ব) ক্ষেত্র অধিকর্তা হরিশ বলেন, “ওই সুমারির জন্য প্রতিটি রেঞ্জ এলাকা ভিত্তিক প্রশিক্ষণ হবে।” কোচবিহার বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “খাদ্য শৃঙ্খল অবস্থা জানা যাবে।”
পরিবেশপ্রেমীদের একাংশও জানাচ্ছেন, উত্তরের জঙ্গলে বাইসন বেড়েছে। মাঝেমধ্যে লোকালয়ে বাইসন ঢুকে পড়ছে। জঙ্গলে খাবারের অভাবের জেরে বাইসনের মতো তৃণভোজীরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে বলেও বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। তা ছাড়া চিতাবাঘের সংখ্যাও কম নয়। তাই হরিণের মতো অন্য তৃণভোজীদের সংখ্যা জানাটাও ভীষণ জরুরি। হরিণের সংখ্যা নিয়েও একটা স্পষ্ট চিত্র উঠে আসবে। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “খাদ্য, খাদক সম্পর্ক, খাদ্য শৃঙ্খল বজায় রাখা বন্য ও বন্যপ্রাণ দুইয়ের স্বার্থেই ভীষণ জরুরি। ফলে সুমারির তথ্য সামগ্রিক ভাবে কাজে লাগবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy