তালা খুলে শাহজাহান শেখের বাড়িতে ঢুকছে সিবিআই। — নিজস্ব চিত্র।
তালা খুলে শাহজাহান শেখের বাড়িতে ঢুকল সিবিআই। তাদের সঙ্গে রয়েছেন ইডির দু’জন আধিকারিক এবং ফরেন্সিক দল।
শুক্রবার সকালে আবার সন্দেশখালিতে এসেছে সিবিআই। বৃহস্পতিবারও তারা সন্দেশখালিতে শাহজাহানেক বাড়ি এবং আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখেছে। তবে শুক্রে সিবিআইয়ের দলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান-সহ রয়েছেন অন্তত ৫০ জন। অর্থাৎ, বড় দল নিয়ে সন্দেশখালিতে এসেছে তারা। শাহজাহানের বাড়িতে তদন্তকারীরা ঢুকেছেন। বাড়ি ঘিরে ফেলেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। চারপাশের এলাকা ঘুরে দেখা হচ্ছে।
সিবিআইয়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও রয়েছে ফরেন্সিক দল। এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফরেন্সিকের সদস্যেরা শাহজাহানের বাড়ির আশপাশ, যাওয়া-আসার এলাকার স্কেচ করে নিচ্ছেন। ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে বিভিন্ন মুহূর্ত। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন দুই ইডি আধিকারিকও। ইডির সঙ্গে কথা বলেই তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
আক্রান্ত ইডি আধিকারিকেরাই সন্দেশখালিতে সিবিআইয়ের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁরা হাত নেড়ে কোন দিন থেকে কী ভাবে আক্রমণ হয়েছিল, তা সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক আধিকারিকদের বোঝাচ্ছেন। তার স্কেচ এবং ভিডিয়োগ্রাফি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, শাহজাহানের বাড়ির সামনে আকুঞ্জীপাড়া মোড় এলাকায় রাস্তার মাপজোক করতেও দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর আধিকারিকদের।
এর পর সিবিআই যায় সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান মার্কেটে। সেখানে শাহজাহানের একটি অফিস ছিল। আগের দিনও সেখানে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, ৫ তারিখের ঘটনার পর থেকেই এই অফিস বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে আর কেউ কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। এই অফিসের তালার চাবি সিবিআইয়ের কাছে নেই। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলছেন আধিকারিকেরা। তবে বাজারে কাউকে ভিড় করতে দেওয়া হচ্ছে না।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। ওই ঘটনার অন্যতম মূল অভিযুক্ত শাহজাহান এখন তাদের হেফাজতে রয়েছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দিনভর শাহজাহানকে জেরা করেছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। তার পরেই শুক্রে তাদের দল পৌঁছে গিয়েছে সেই শাহজাহানের ডেরায়।
বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে গিয়েছিলেন ইডির ডেপুটি ডিরেক্টর গৌরব ভারিল। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনায় তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। দুপুরের দিকে ইডির আরও এক কর্তা নিজামে গিয়েছিলেন। তাঁদের বয়ান রেকর্ড করে থাকতে পারে সিবিআই।
শাহজাহানের বাড়িতে এর আগে দু’বার গিয়েছিল ইডি। প্রথম বার তারা ঢুকতেই পারেনি। বাইরে থেকে শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে মার খেয়ে ফিরতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের। দ্বিতীয় বার শাহজাহানের বাড়িতে তালা ভেঙে ঢোকে ইডি। ফাঁকা বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর বাড়িটি সিল করে দিয়ে যায় ইডি। শুক্রবার সেই সিল খোলা হল।
৫৫ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর শাহজাহানকে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। তাঁকে সিআইডি-র হেফাজতে রাখা হয়েছিল। হাই কোর্টের নির্দেশে পরে তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। ৫ জানুয়ারির ঘটনা নিয়ে সন্দেশখালির ন্যাজাট থানায় দায়ের হওয়া দু’টি এফআইআর এবং বনগাঁ থানায় দায়ের হওয়া একটি এফআইআরের তদন্তভার পেয়েছে সিবিআই। বনগাঁতে রেশন মামলার সূত্রে প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে তল্লাশি এবং তাঁকে গ্রেফতারের সময়েও ইডি বাধা পেয়েছিল। ইডির উপর হামলার সেই ঘটনাগুলির তদন্ত করছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার সন্দেশখালির পাশাপাশি তাদের একটি দল বনগাঁতেও গিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy