—প্রতীকী ছবি।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চেস্ট বিভাগের সেমিনার হলেই কি ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল তরুণী ডাক্তার ছাত্রীকে? না কি অন্যত্র ঘটনা ঘটিয়ে সেমিনার হলে মৃতদেহ সাজিয়ে রাখা হয়েছিল? আপাতত এই প্রশ্নেই কপালে ভাঁজ সিবিআই-এর তদন্তকারীদের। এবং তা ঘটে থাকলে সেই হত্যাকাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার বিষয়টিরই পাল্লা ভারী বলে তাঁরা মনে করছেন।
তদন্তকারীদের কথায়, আরজি করের চেস্ট বিভাগে ৬০টি শয্যা রয়েছে। তা ছাড়া, সেমিনার হল-সহ আরও দু’টি ঘর রয়েছে। ওই ঘরের শয্যাগুলি রাতে সাধারণত খালি থাকে। সেখানেও খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চেস্ট বিভাগের নানা জায়গায় থ্রিডি স্ক্যানারের মাধ্যমে ম্যাপিং এবং ভিডিয়ো করা হয়েছে।
রবিবার মেয়েটির মা, বাবাও বলেন, তাঁরাও অন্যত্র খুন হওয়ার সন্দেহ করছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘শুনছি, যে ভাবে মেয়ের দেহ দেখানো হয়েছে, সে ভাবে দেহ ছিল না। শরীরে পোশাক ছিল না। মেয়েকে দেখতে দিতে যে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করানো হয়েছিল, সেই সময়ে আমাদের আড়াল করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছিল।’’ তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘ কিছু আড়াল করার মতলব ছাড়া কেন আমাদের মেয়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখেও ফোনে বলা হবে, ও আত্মহত্যা করেছে?’’
ঘটনাস্থল ও সংলগ্ন জায়গা জরিপ করার পাশাপাশি আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকেও শুক্রবার থেকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে সিবিআই। রবিবারও বেলা সাড়ে ১০টায় তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছেন সন্দীপ। গভীর রাত পর্যন্ত ছাড়া পাননি।
তদন্তকারীদের মতে, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে কার কার সঙ্গে সন্দীপের কথা হয়েছিল, তা বার করা এই তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ওই দিনের ঘটনার পরে সন্দীপের ফোনের কিছু কল রেকর্ড, কন্ট্যাক্ট নাম ও নম্বর মোছা হয়েছে বলেও প্রাথমিক তথ্য উঠে এসেছে। তাঁরা কারা, জানতে সিবিআই-এর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা সন্দীপের মোবাইল ফোন পরীক্ষা করছেন বলেও জানা গিয়েছে।
নাম-নম্বর মোছা হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য উঠে এসেছে। তাঁরা কারা, তা জানতে সন্দীপের মোবাইল ফোন পরীক্ষা করছেন সিবিআই-এর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সূত্রের খবর, সপ্তাহখানেক আগে সন্দীপের মোবাইলের কন্ট্যাক্ট তালিকা থেকে বেশ কিছু নাম-নম্বর ও হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ মোছা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে। হাসপাতালে সন্দীপের অফিসের ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ কম্পিউটারও খতিয়ে দেখবে সিবিআই। দরকারে তা ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হতে পারে। সূত্রের খবর, চেস্ট বিভাগের প্রধান ও অন্য আধিকারিকদের মোবাইল ফোনের নথি সংগ্রহ করা হচ্ছে।
নিহত ওই চিকিৎসক কোনও চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন কি না, তা জানার চেষ্টা করছে সিবিআই। ওই চিকিৎসকের ঘনিষ্ঠ চার সহপাঠীকেও এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তেমন উল্লেখযোগ্য তথ্য মেলেনি বলে দাবি তদন্তকারীদের। ধৃত সঞ্জয় রায়ের কিছু অসংলগ্ন কথাবার্তাও তাঁদের চিন্তায় রেখেছে। সঞ্জয়ের থেকে কথা বার করার জন্য মনস্তত্ত্ববিদের সাহায্য নিতে পারে সিবিআই।
এ দিন সকাল থেকে আরজি করে থ্রিডি স্ক্যানার দিয়ে জরুরি বিভাগ-সহ তিনতলা পর্যন্ত ভাঙচুরের ম্যাপিং ও ভিডিয়ো সংগ্রহ করে সিবিআই। আজ, সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আরজি করে ভাঙচুরের অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy