ইয়ানিক সিনার। ছবি: রয়টার্স।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে ইয়ানিক সিনার। সেমিফাইনালে আমেরিকার বেন শেলটনকে তিনি হারালেন সরাসরি সেটে। ইটালির খেলোয়াড়ের পক্ষে ম্যাচের ফল ৭-৬ (৭-২), ৬-২, ৬-২। রবিবার ফাইনালে শীর্ষ বাছাই সিনারের প্রতিপক্ষ দ্বিতীয় বাছাই আলেকজান্ডার জ়েরেভ।
একটা সময় পুরুষদের টেনিসে আমেরিকার দাপট ছিল প্রশ্নাতীত। ২০০৩ সালের পর সেই দাপট আর নেই। সে বছর চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের দু’টি জেতেন আমেরিকার খেলোয়াড়েরা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতেন আন্দ্রে আগাসি। ইউএস ওপেন জেতেন অ্যান্ডি রডিক। তার পর টানা ৮৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম অধরা আমেরিকার খেলোয়াড়দের। এ বার কিছুটা আশা তৈরি করেছিলেন ২২ বছরের শেলটন। একাধিক অঘটন ঘটালেও সেমিফাইনালে প্রত্যাশাপূরণ করতে পারলেন না। এই ফলে সিনার-সমর্থকদের যেমন দারুণ উচ্ছ্বাসের কারণ নেই, তেমন শেলটন-সমর্থকদের হতাশার কিছু নেই। ফল প্রত্যাশিত। যদিও লড়াইহীন সেমিফাইনাল অপ্রত্যাশিত।
পুরুষদের সিঙ্গলসে শেলটন এখন তৃতীয় বাছাই। এটিপি ক্রমতালিকায় রয়েছেন ২০ নম্বরে। তিনি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবেন, তেমন আশা ছিল না টেনিসপ্রেমীদের। পুরুষ সিঙ্গলসে আমেরিকার বাজি ছিলেন চতুর্থ বাছাই টেলর ফ্রিৎজ়। তৃতীয় রাউন্ডে ফ্রিৎজ় হেরে যাওয়ার পর আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন আমেরিকার টেনিস প্রেমীরা। কিছুটা আশা ছিল টমি পলকে ঘিরে। দ্বাদশ বাছাই কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যান জ়েরেভের কাছে। অন্য দিকে, শেলটন সেমিফাইনালে উঠে ২২ বছরের ট্রফি খরা কাটানোর আশা তৈরি করেছিলেন। আসলে প্রতিযোগিতার ২১তম বাছাইতে তেমন কঠিন প্রতিপক্ষের সামনে পড়তে হয়নি। ক্রীড়াসূচি ছিল তাঁর পক্ষে। তৃতীয় রাউন্ডে ১৬তম বাছাই লোরেন্জো মুসেত্তি ছাড়া কোনও বাছাই খেলোয়াড়কে সামতে হয়নি তাঁকে। বলা যায় কঠিন পরীক্ষা না দিয়েই সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সিনারকে হারানোর জন্য যা যথেষ্ট ছিল না।
প্রায় এক পেশে ম্যাচ জিতলেন সিনার। শেলটন কিছুটা লড়াই করলেন শুধু প্রথম সেটে। টাইব্রেকার পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন সিনারকে। তবু শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ২-৭ ব্যবধানে টাইব্রেকার হেরে ৬-৭ ফলে সেট খুইয়ে বসেন। এই টাইব্রেকার থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজের র্যাকেটে নিয়ে নেন ইটালির তরুণ। পরের দু’টি সেট তিনি জিতে নেন ৬-২, ৬-২ ব্যবধানে। যা কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনালের মানকে চিহ্নিত করতে পারে না।
আগামী এক দশক পুরুষদের টেনিস যাঁরা শাসন করতে পারেন, তাঁদের অন্যতম সিনার। গত বছর দু’টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। অস্ট্রেলিয়ায় এ বার তাঁর খেতাব রক্ষার লড়াই। সেই লড়াইয়ে তাঁর প্রতিপক্ষ জ়েরেভ। নিঃসন্দেহে কঠিন লড়াই হবে জার্মানের সঙ্গে। সিনার জানেন কী ভাবে গ্র্যান্ড স্ল্য়াম জিততে হয়। সে ভাবেই জিতেছেন সেমিফাইনাল। শুক্রবার তাঁর প্রথম সার্ভিস ঠিকঠাক পড়েনি। কাজে লাগাতে পারেননি সব ব্রেক পয়েন্ট। তবু ম্যাচে তাঁর আধিপত্য ছিল। শেলটন ডাবল ফল্ট করলেন ছ’টি! গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনালে অবিশ্বাস্য। এতগুলি ডাবল ফল্টের মূল্য চুকিয়েছেন আমেরিকার তরুণ। একের পর এক আনফোর্সড এরর করেছেন। সহজ সুযোগ হেলায় নষ্ট করেছেন।
শেলটন শুধু হারেননি। নিজের দেশের টেনিসের করুণ পরিস্থিতির বিজ্ঞাপন মেলে ধরেছেন। জিম কুরিয়র, পিট সাম্প্রাস, জন ম্যাকেনরো, জিমি কোনর্সদের উত্তরাধিকার বহন করার মতো কাঁধ দেখা যাচ্ছে না আমেরিকার টেনিসে। একটা রডিকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। টানা ৮৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম অধরা থেকে গেল আমেরিকার পুরুষ টেনিস খেলোয়াড়দের। অথচ সবচেয়ে বেশি ৯৪জন গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী রয়েছেন সে দেশে। সবচেয়ে বেশি ৩৫১টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন আমেরিকার খেলোয়াড়েরাই। তার মধ্যে পুরুষেরা জিতেছেন ১৪৭ বার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy