মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সিবিআইয়ের নোটিস গেল এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। তাঁর বাড়ির অফিসে ৪০ বছর ধরে সচিবের কাজ করা মানিক মজুমদারকে সিবিআইয়ের দফতরে হাজির হতে বলে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একই চিঠি গিয়েছে তৃণমূলের দুই সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সুব্রত বক্সির কাছেও। তৃণমূলের এক প্রাক্তন সাংসদকেও সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ১০ থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর পর এঁদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
তৃণমূল অবশ্য বিষয়টি ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে যুদ্ধং দেহি মনোভাব নিয়েছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সূত্রে বলা হয়, যাঁদের নামে এ ভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাঁরা কেউ হাজিরা দেবেন না। কারণ, বিজেপি চাপ দিয়ে ‘বশ্যতা’ স্বীকার করাতে চাইছে। দল এই প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করবে। কোনও মতে মাথা নত করবে না। তাতে ওরা যা পারে করুক। দলের এক শীর্ষকর্তার কথায়,‘‘দিল্লির শাসকেরা বুঝতে পারছেন, ওঁদের দিন ঘনিয়ে আসছে। তাই এ ভাবে ধমকে-চমকে বাগ মানাতে চাইছে। কিন্তু বাংলার মাটিকে ওরা চেনে না। এখানে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।’’
সিবিআইয়ের দাবি, তৃণমূলের মুখপত্রের তহবিল যাঁরা রক্ষণাবেক্ষণ করেন, তাঁদেরই নোটিস দেওয়া হয়েছে। আয়কর দফতর কিংবা ব্যাঙ্কে সর্বত্র দলীয় মুখপত্রের ঠিকানা দেখানো হয়েছে, ৩০ বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। সেই কারণেই মানিকবাবুকে ওই ঠিকানায় নোটিস পাঠানো হয়েছিল। সিবিআইয়ের দাবি, সেই নোটিস পাওয়ার পর কলকাতা পুলিশের এক কর্তা তাদের চিঠি দিয়ে জানান, ভুল ঠিকানায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। মানিক মজুমদার ওই ঠিকানায় থাকেন না। ওটি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি। এর পর সিবিআই মানিকবাবুর বাড়ির ঠিকানায় চিঠি পাঠায়।
আরও পড়ুন: ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে অখুশি রাজ্য, যেতে পারে সুপ্রিম কোর্টে
কেন ওই চার জনকে ডাকা হল?
সিবিআইয়ের যুক্তি, বছর আটেক আগে মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবির দু’টি প্রদর্শনী হয়েছিল। সেই ছবি বিক্রির টাকা শাসক দলের মুখপত্রের তহবিলে জমা পড়েছিল। সিবিআইয়ের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি যেমন বিশিষ্টজনেরা কিনেছিলেন, তেমনই বেশ কয়েকজন বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার মালিকও কিনেছিলেন। সিবিআইয়ের দাবি, সেই সব ছবি কেনা হয়েছিল অন্য ব্যক্তিদের সামনে রেখে। তারা মুখপত্রের তহবিল পরীক্ষা করে দেখেছে, ছবি কিনতে অন্তত ৩০ লক্ষ টাকা সারদা-রোজভ্যালির মতো সংস্থা থেকে গিয়েছিল। সে সময় বিক্রি হওয়া ছবির অন্তত ১৫টি হাতে নিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বক্তব্য, তহবিলের স্বাক্ষরকারীরা হলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মানিক মজুমদার এবং দলের রাজ্যসভার এক প্রাক্তন সাংসদ। সুব্রত বক্সী এখন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর তদারকিতেই দল চলে। ফলে তাঁদের কাছ থেকেই তহবিলের হিসেব বুঝে নিতে চাওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্য এত দিন চুপ করে বসে থাকল! কিচ্ছু করল না!’, রথযাত্রা নিয়ে রাজ্যের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy