নারদের স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফুটেজে যাঁদের দেখা গিয়েছে এবং যাঁদের দেখা না-গেলেও কথাবার্তা শোনা গিয়েছে, এ বার তাঁদের গলার স্বরের ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে চাইছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র বলছে— ভিডিও ফুটেজগুলো যে আসল, আদালত তা আগেই জানিয়ে দিয়েছে। তার পরেও তদন্তকে আঁটোসাঁটো করতে কণ্ঠস্বরের ফরেন্সিক পরীক্ষার তথ্যপ্রমাণও আস্তিনে রাখতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নারদ-কাণ্ডে যে সব মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তার বাইরে বেশ কিছু লোকের উপস্থিতি রয়েছে অসম্পাদিত ফুটেজে। টাকা দেওয়া-নেওয়ার সময়ে তাঁদের কথা শোনা গিয়েছে। কারা তাঁরা, তদন্তকারীদের কাছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেই সব কুশীলবদের হদিস পেতে গলার স্বরের ফরেন্সিক পরীক্ষা বা ভয়েস স্পেকট্রোগ্রাফি জরুরি বলে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, অসম্পাদিত ফুটেজে এমন ছবি মিলেছে, যেখানে এক জন বিধায়ককে পিছন ঘুরে তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। শোনা গিয়েছে, বিধায়কের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনও। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে ছবিতে দেখা যাচ্ছে না। ফুটেজে এই সব ‘অনুপস্থিত’ লোকেদের জবানবন্দি তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এ জন্য আদালতের অনুমতি প্রয়োজন।
আরও পড়ুন...
গুরুতর অসুস্থ ম্যাথু আসছেন না
সিবিআই তদন্তে কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করানোটা অবশ্য নতুন নয়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের এক সময়ের প্রধান সচিব রাজেন্দ্র কুমার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁর গলার স্বর পরীক্ষা করানোর অনুমতি চেয়েছিল সিবিআই। সরকারি কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে একটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার কথোপকথনের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ওই আমলার ভয়েস স্পেকট্রোগ্রাফি হয়েছিল দিল্লির ফরেন্সিক গবেষণাগারে। ২০১২-তে ভোপালে শেহেলা মাসুদ নামে এক আরটিআই কর্মীর খুনে সেখানকার এক বিজেপি বিধায়কের গলার স্বরের পরীক্ষা করিয়েছিল সিবিআই। শিনা বরা হত্যাকাণ্ডেও তাঁর মা, অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের ভয়েস স্পেকট্রোগ্রাফি হয়েছিল।
গলার স্বর পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি ছবিতে যাঁদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের মোবাইলের কল লিস্টও খতিয়ে দেখছে সিবিআই। স্টিং অপারেশনের আগে ওই নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের দেখা করিয়ে দেওয়ার পিছনে তাঁদের সাঙ্গোপাঙ্গদের কী ভূমিকা ছিল, কল রেকর্ড ঘেঁটে তার ধারণা পেতে চাইছে সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্র বলছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নারদ-কাণ্ডে জড়িত এক সরকারি অফিসারের এক আত্মীয় এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। রাজ্যের এক প্রভাবশালী বিধায়ক ও ম্যাথুর সঙ্গে সেই সময় তাঁর ঘন ঘন কথা হতো। ওই ব্যক্তিকে জেরা করতে ডাকার আগে তাঁর মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখতে চাইছে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy