Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Shahjahan Sheikh

মোবাইলই কি শাহজাহানের প্রাণভোমরা! সন্দেশখালির শেখের সঙ্গে কাদের ‘সন্দেশ’ বিনিময়? খুঁজছে সিবিআই

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করে শাহজাহানকে। তার ছ’দিন পরে গত বুধবার শাহজাহানকে হেফাজতে পায় সিবিআই। কিন্তু শাহজাহানকে হাতে পেলেও তাঁর মোবাইল হাতে আসেনি সিবিআইয়ের।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪ ১৩:৩২
Share: Save:

শাহজাহান শেখকে হাতে পেয়েও খুশি নয় সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাল মিলিয়ে পুরোদমে চলছে তদন্ত। কিন্তু সিবিআই এখনও হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে শাহজাহানের মোবাইল। কারণ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ধারণা, এই মোবাইলেই লুকিয়ে রয়েছে শাহজাহানের ‘প্রাণভোমরা’। সন্দেশখালির শেখ কাদের সঙ্গে ‘সন্দেশ’ বা বার্তা বিনিময় করেছেন তার বিশদ পাওয়া যেতে পারে ওই মোবাইলেই। যা গোপন করতে চাইছেন শাহজাহান।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করে শাহজাহানকে। তার ছ’দিন পরে গত বুধবার শাহজাহানকে হেফাজতে পায় সিবিআই। কিন্তু শাহজাহানকে হাতে পেলেও তাঁর মোবাইল হাতে আসেনি সিবিআইয়ের। সূত্রের খবর, পুলিশের কাছেও সেই মোবাইল নেই। সিবিআইয়ের প্রশ্ন, তা হলে সন্দেশখালির শেখের মোবাইল গেল কোথায়?

সিবিআইয়ের এই প্রশ্নে রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, শাহজাহানের আইফোন থ্রি পুলিশই হস্তগত করেছিল এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেটি পুলিশের হাতেই রয়েছে নাকি তা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে, জানতে সিবিআইকে তদন্ত করে দেখতে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা একাধিক মোবাইল ব্যবহার করতেন বলেই সিবিআইয়ের বিশ্বাস। বস্তুত, যে মামলায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে সিবিআই, তাতে তাঁর মোবাইলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে মনে করে ইডিও। কারণ, ইডি তাদের অভিযোগপত্রে জানিয়েছে, গত ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের গ্রামে ইডির উপর হামলার ঘটনায় শাহজাহান ফোনেই উস্কানি দিয়েছিলেন গ্রামবাসীদের। ইডি জানিয়েছিল, শাহজাহানের মোবাইল টাওয়ারের ঠিকানা দেখে তারা বুঝতে পেরেছিল, শাহজাহান ঘটনার সময় নিজের বাড়ির ভিতরেই ছিলেন। এবং ফোনেই নিজের অনুগতদের নির্দেশ দিয়েছিলেন গ্রামবাসীদের একত্র করার জন্য।

তবে এ-ও ঠিক, তার পরে ৫৬ দিন ধরে নিখোঁজ শাহজাহানের মোবাইল টাওয়ারের সন্ধান নিশ্চিত ভাবেই পাওয়া যায়নি। কারণ, সে ক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশ তার মোবাইলের লোকেশন দেখেই তাকে গ্রেফতার করতে পারত। কিন্তু পুলিশ জানিয়েছিল, তারা অনেক খুঁজেও শাহজাহানের সন্ধান পায়নি।

ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তবে শাহজাহান শেখের এক বা একাধিক মোবাইল গেল কোথায়? তবে কি ইডি তাঁর বাড়িতে যাওয়ার পর সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা নিজের গতিবিধি লুকোতেই মোবাইল বর্জন করেছিলেন?

শাহজাহান যে ধরাছোঁয়ার মধ্যেই ছিলেন, তার প্রমাণ মেলে শাহজাহানকে নিয়ে মামলায় যখন আইনজীবী তাঁর সই নিয়ে আসেন। সিবিআই জানতে চাইছে, এমন কোথায় কোথায় যেতে হয়েছিল শাহজাহানকে, যে সেই তথ্য গোপন করতে হল? না কি ওই মোবাইলে সন্দেশখালির নেতার সঙ্গে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ‘সন্দেশ’ বা বার্তা বিনিময়ের প্রমাণ রয়েছে বলেই লুকোতে হল মোবাইল!

উল্লেখ্য, মোবাইলে শাহজাহান কাদের ফোন করেছেন সেই তালিকা পাওয়া যাবে মোবাইল নেটওয়ার্কের সংস্থার কাছ থেকেই। কিন্তু মোবাইল না পেলে যা জানা যাবে না, তা হল শাহজাহানের চ্যাটের বিষয়ে। হোয়াট্‌সঅ্যাপ বা অন্য কোনও অ্যাপ মারফত শাহজাহান কারও সঙ্গে কথা বলেছেন কি না, বা বললে কী বলেছেন, তা স্পষ্ট হবে তার মোবাইল হাতে পাওয়ার পরই। কিন্তু আপাতত শাহজাহানের কোনও মোবাইলই গোয়েন্দাদের হাতে আসেনি বলে সিবিআই সূত্রে খবর।

এর আগে সিবিআই তল্লাশি চলাকালীন বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছিলেন তাঁর মোবাইল। শাহজাহানও তেমনই কিছু করেছেন কি না, তা-ও খুঁজে দেখছে সিবিআই। তবে তারা নিশ্চিত ওই মোবাইল হাতে পেলে শাহজাহান সম্পর্কে অনেক অজানা দরজা খুলে যেতে পারে তাদের সামনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shahjahan Sheikh Sandeshkhali Incident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE