Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ভয়ে কথা বন্ধ, দিদির মন্তব্যে মিঠুন-অস্বস্তি

গলায় কাঁটা বিঁধেছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত অস্বস্তি সামনেই এনে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! সারদা-কাণ্ডে নাম জড়ানোর পর থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন মিঠুন চক্রবর্তী। তৃণমূলের টিকিটে তিনি রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:০০
Share: Save:

গলায় কাঁটা বিঁধেছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত অস্বস্তি সামনেই এনে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!

সারদা-কাণ্ডে নাম জড়ানোর পর থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন মিঠুন চক্রবর্তী। তৃণমূলের টিকিটে তিনি রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে সংসদের চৌহদ্দিতেও দেখা যায়নি বলিউডের এই বাঙালি তারকাকে। এত দিন প্রকাশ্যে এই নিয়ে কিছু না বললেও বৃহস্পতিবার অসহিষ্ণুতা-বিতর্কে মিঠুনের নাম জড়িয়ে নিল তৃণমূল। কলকাতায় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সমাবেশে দাঁড়িয়ে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ করলেন, ‘‘মিঠুন চক্রবর্তী আমার সাংসদ। সে আমার সঙ্গে কথা বলতে ভয় পায়! এমন করে সব ভয় দেখায়!’’ একই দিনে সংসদে বিতর্কে অংশ নিতে গিয়ে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও উল্লেখ করলেন, আমির খানদের মতো মিঠুনও অসহিষ্ণুতার শিকার।

দেশ জুড়ে চলতি অসহিষ্ণুতা-বিতর্কে মিঠুন অবশ্য এখনও মুখ খোলেননি। তাঁর নীরবতার জন্য কেউ তাঁকে আক্রমণও করেনি। তা হলে তাঁর দলনেত্রী এখন এই তারকা-সাংসদের নাম টেনে আনলেন কেন? তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, পাশে দাঁড়ানোর কৌশলে আসসে মিঠুনের সঙ্গে দূরত্ব রচনার ক্ষেত্রই প্রস্তুত করে রাখলেন তৃণমূল নেত্রী! যা তিনি অতীতে আরও অনেকের ক্ষেত্রেই করেছেন। দলনেত্রীর ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘‘মিঠুনদা সত্যিই খুব চাপে আছেন। জামিন পাওয়া মাত্রই সৃঞ্জয় বসু যেমন সাংসদ-পদ এবং তৃণমূল ছেড়ে দিয়েছিল, এখানেও একই রকম পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। এটা জেনেই দিদি মিঠুনদা’র পাশে দাঁড়ালেন। আবার ভবিষ্যতে মিঠুনদাও সত্যিই সৃঞ্জয়ের পথে হাঁটলে যাতে এই ভয়ের কথা বলা যায়, সেই ব্যবস্থাও আগাম করে রাখলেন!’’

খোদ মিঠুনের বক্তব্য অবশ্য এ বারও জানা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি, এসএমএসেরও জবাব আসেনি। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, দলের সঙ্গেও মিঠুনের সম্পর্ক এখন এই রকমই শীতল। ইডি-র কাছে টাকার চেক পাঠিয়ে সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা করেছেন ঠিকই। কিন্তু দলের দিকে ফিরে তাকাননি! দলের প্রথম সারির এক নেতা বলছেন, ‘‘মিঠুন সংসদে আসেন না। প্রতি বার অধিবেশনের আগে একটা চিঠি দেন অনুপস্থিতির কারণ জানিয়ে। পিঠের ব্যথা যে ওঁকে ভোগাচ্ছে, সেটা সংসদকে জানিয়ে দেন। এ বারের অধিবেশনে অবশ্য এখনও মিঠুনের চিঠি আসেনি।’’ এরই পাশাপাশি তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, দলনেত্রী বা দলের সঙ্গে যোগাযোগ এড়িয়ে চললেও শাসক দলে অধুনা ‘ব্রাত্য’ সাংসদ মুকুল রায়ের সঙ্গে তুলনায় অল্পবিস্তর সৌজন্য বিনিময় হয় বলিউডের ‘দাদা’র। এবং সেটাও দিদির প্রবল অস্বস্তির কারণ!

বলিউডের আর এক তারকা সম্পর্কে নীরবতা ভেঙে মমতা অবশ্য এ দিন সাফ বলেছেন, ‘‘আমির খান যা বলেছে, সেটা ওর গণতান্ত্রিক অধিকার। তার জন্য দেশ ছেড়ে যেতে বলার তুমি (এক বারও বিজেপি বা সঙ্ঘের নাম নেননি) কে? দেশটা আমাদের সকলের!’’ মিঠুন-প্রসঙ্গের পরেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলে পরিণতি মারাত্মক হবে! কিন্তু তৃণমূল সূত্রই বলছে, প্রথমটা আক্ষরিক অর্থে পাশে দাঁড়ানোই। আর দ্বিতীয়টা আসলে পাশে দাঁড়ানোর মোড়কে ‘মিঠুন-বলি’র মুখবন্ধ!

অন্য বিষয়গুলি:

MostReadStories
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE