Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
SSC Recruitment Case

ভুয়ো শিক্ষকদের বেতন ফেরত নিতে কী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য? রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাই কোর্ট

মুর্শিদাবাদের সুতির গোথা এ রহমান হাই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। এসএসসি নিয়োগের সেই মামলাতেই ভুয়ো শিক্ষকদের বেতন ফেরত নিয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, জানতে চায় আদালত।

এসএসসি মামলায় রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট।

এসএসসি মামলায় রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৪ ১৬:৫১
Share: Save:

রাজ্যের ‘ভুয়ো’ শিক্ষকদের বেতন বাবদ যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে, তা পুনরুদ্ধারের জন্য কী পদক্ষেপ করেছে সরকার? জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। এই সংক্রান্ত রিপোর্ট রাজ্যের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনে ‘দুর্নীতি’র একটি মামলায় রাজ্যের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে হাই কোর্ট। পরবর্তী শুনানির দিন ওই রিপোর্ট রাজ্যকে জমা দিতে হবে আদালতে।

মুর্শিদাবাদের সুতির গোথা এ রহমান হাই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। সেই মামলাতেই বেশ কয়েক জন ভুয়ো শিক্ষক ধরা পড়েছিলেন। অভিযোগ, তাঁরা নথি জাল করে চাকরি পেয়েছেন। ওই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। মামলাটির তদন্তে রাজ্যের আরও পাঁচ ভুয়ো শিক্ষকের নাম উঠে আসে। তাঁরাও নথি জাল করে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বিচারপতি বসু জানান, ওই শিক্ষকদের বেতন সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা ফেরত নিতে হবে রাজ্যকে।

গোথা এ রহমান স্কুলের এই মামলায় এসএসসি পশ্চিমাঞ্চলের চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। তিনি এখনও জেল হেফাজতে। কিন্তু ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনও বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট। শুনানি চলাকালীন এসএসসির উদ্দেশে বিচারপতি বসুর মন্তব্য, ‘‘জেল থেকে বার হলে ওই ব্যক্তিকে কি আবার আপনারা এসএসসির চেয়ারম্যান করতে চাইছেন? আদালত বলার পরেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে দেরি হচ্ছে?’’ কেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হয়নি, আগামী শুনানিতে তা-ও আদালতে জানাতে হবে এসএসসিকে। আগামী ১২ অগস্ট হাই কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

মুর্শিদাবাদের ওই স্কুলটিতে চাকরি পেয়েছিলেন প্রধান শিক্ষকের পুত্র। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। তথ্য জানার অধিকার আইনে এই নিয়োগ নিয়ে তথ্য জানতে চান অনেকে। হাই কোর্টে দায়ের হয় মামলা। জানা যায়, অনিমেষ ওই স্কুলে দীর্ঘ দিন ধরে চাকরি করলেও জেলার স্কুল পরিদর্শকের কাছে তাঁর নামে কোনও নিয়োগপত্রই নেই। অর্থাৎ, তিনি অবৈধ ভাবে চাকরি পেয়েছেন।

তদন্তে জানা যায়, নবম-দশম শ্রেণির এক ভুগোল শিক্ষকের নিয়োগপত্র এবং সুপারিশপত্র জাল করেই এই চাকরি পেয়েছেন অনিমেষ। প্রশ্ন ওঠে, যদি ওই শিক্ষকের নিয়োগপত্র জাল করে অনিমেষ চাকরি পেয়ে থাকেন তবে যোগ্য ব্যক্তির কী হল? তিনি কি চাকরি করছেন না? দেখা যায়, তিনিও বহাল তবিয়তে চাকরিরত মুর্শিদাবাদেরই বেলডাঙার একটি স্কুলে। সাধারণত প্রত্যেক নিয়োগপত্রের একটি মেমো নম্বর থাকে। অনিমেষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সেই মেমো নম্বর এক রেখে নিজের নাম বদলে দেন নিয়োগপত্রে। সেই জাল মেমো নম্বরের নিয়োগপত্রেই ভুগোল শিক্ষক হিসাবে চাকরি পান গোথা এ রহমান স্কুলে। যদিও আরটিআইয়ের মাধ্যমে স্কুলের কাছে অনিমেষের ব্যাপারে তথ্য চাওয়া হলে প্রধান শিক্ষক অর্থাৎ অনিমেষের বাবা জানিয়ে দেন, অনিমেষ সেখানে কর্মশিক্ষার শিক্ষক।

হাই কোর্টে এই মামলা এবং অনিমেষের বিরুদ্ধে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ দেখে বিচারপতি বসু জানান, ঘটনাটি অনভিপ্রেত। অবিলম্বে অনিমেষের স্কুলে প্রবেশ এবং বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন তিনি। বেতন ফেরতের কথাও বলা হয়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী কী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য, তা রিপোর্টে জানাতে হবে আগামী শুনানির দিন।

অন্য বিষয়গুলি:

Bengal SSC Recruitment Case Murshidabad SSC CID
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE