বাম যুবনেতা কলতান দাশগুপ্ত। —ফাইল চিত্র।
বাম যুবনেতা কলতান দাশগুপ্তকে কী কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা নিয়ে এ বার রাজ্যের থেকে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার চক্রান্ত সংক্রান্ত একটি ফোনালাপের অডিয়ো ক্লিপ (যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছিল। এর পরেই কলতানকে গ্রেফতার করেছিল বিধাননগর পুলিশ। বাম যুবনেতার গ্রেফতারির বিরুদ্ধে ও তাঁর জামিনের দাবিতে হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। বুধবার ওই মামলার শুনানিতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন কলতানের গ্রেফতারির বৈধতা নিয়ে।
গত শুক্রবার ওই অডিয়ো ক্লিপটি প্রকাশ্যে এনেছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। পরে ওই অডিয়ো ক্লিপের সূত্র ধরে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। পরে ওই মামলায় প্রথমে গ্রেফতার করা হয়েছিল সঞ্জীব দাস নামে একজনকে। পরে শনিবার ভোরে গ্রেফতার হয়েছিলেন কলতান। বুধবার হাই কোর্টে বিচারপতি ভরদ্বাজের এজলাসে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, একই অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এখানেই বিকাশের যুক্তি, পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে সঞ্জীবকে গ্রেফতার করেছিল। পরে সঞ্জীবকে জেরা করে কলতানের নাম পেয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। কিন্তু সঞ্জীবকে জেরার আগেই এফআইআর কপিতে বাম যুবনেতার নাম ছিল কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বিকাশরঞ্জন।
কলতানের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন জানান, ফোনালাপের ভিত্তিতে শুধুমাত্র সন্দেহের বশেই পুলিশ এ কাজ করেছে। তাঁর আরও যুক্তি, যে অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাতে সর্বোচ্চ সাজা তিন বছরের জেল। তার জন্য ৪১(এ) নোটিস প্রয়োজন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সে সব করা হয়নি বলেই আদালতে দাবি বিকাশের। তিনি আরও অভিযোগ তোলেন, কলতানকে অবৈধ ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাঁর জামিন মঞ্জুর হোক। বিকাশের বক্তব্য, আগে গ্রেফতার করে তার পরে গ্রেফতারির সমর্থনে যুক্তি খোঁজা হয়েছে। সে কথা শুনে বিচারপতির মন্তব্য, এ ধরনের গ্রেফতারি তো ‘ঔপনিবেশিক বদভ্যাস’!
যদিও গ্রেফতার করার সময় পুলিশকে যে সব সময় আগে ৪১(এ) নোটিস দিতে হবে, তা ঠিক যুক্তি নয় বলে পাল্টা যুক্তি দেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। তিনি জানান, সন্দেহজনক কোনও ক্ষেত্রে গ্রেফতারির সময় তা বাধ্যতামূলক না-ও হতে পারে। এই মামলাটির ক্ষেত্রে একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের কথা ভাবা হয়েছে বলেও জানান তিনি। কোনও বেআইনি কাজ হয়নি বলেই আদালতে জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল। রাজ্যের আইনজীবী আরও জানান, ধৃত সঞ্জীবই পুলিশকে জানিয়েছিলেন কলতানের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই কলতানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এমনকি সঞ্জীবের কলরেকর্ড থেকে কলতানের নম্বর পাওয়া গিয়েছে বলেও জানান তিনি। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর কলতানের গ্রেফতারির কারণ নিয়ে রাজ্যের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
হাই কোর্টে কলতান মামলার বুধবারের শুনানির পর আশার আলো দেখছেন বাম নেতৃত্বও। বামেদের এক প্রথম সারির নেতা জানিয়েছেন, যে ভাবে শুনানি প্রক্রিয়া চলেছে তাতে বৃহস্পতিবার কলতানের জামিনের ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy