২০২১ সালের ২ মে। বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের দিনই নিজের বাড়ির সামনে খুন হয়েছিলেন বিজেপি নেতা উত্তম ঘোষ। ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় ছ’জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। শুক্রবার অভিযুক্ত ছ’জনেরই জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে আদালত সতর্ক করেছে, জামিনের শর্ত লঙ্ঘন হলে জামিন বাতিলের ক্ষমতা থাকবে নিম্ন আদালতের।
শুক্রবার হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে ছ’জন তৃণমূল কর্মীর জামিনের আবেদন মামলার শুনানি ছিল। প্রায় চার বছর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলবন্দি ছিলেন তাঁরা। শুক্রবারের শুনানি শেষে আদালত জানায়, ১০ হাজার টাকার বন্ডে রানাঘাট আদালত ওই অভিযুক্তদের শর্তসাপেক্ষে জামিন দিতে পারবে। পরবর্তীকালে যদি তাঁরা শর্ত না মানেন, তবে জামিন বাতিল করতে পারবে নিম্ন আদালত।
উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসার বলি হন নদিয়ার গাংনাপুরে বিজেপি নেতা উত্তম। তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধর করারও অভিযোগ পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণে উত্তমকে খুন করেছেন শাসকদলের কর্মীরা। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় শুকদেব বিশ্বাস, সোমনাথ দত্ত, রবি বিশ্বাস, ধনঞ্জয় মণ্ডল, শ্যামল বিশ্বাস এবং গোপাল ছেত্রী নামে ছ’জন স্থানীয় তৃণমূল নেতার। হাই কোর্টের নির্দেশেই ভোট পরবর্তী হিংসার মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। উত্তম-খুনে ওই ছয় তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার হাই কোর্টে অভিযুক্তদের আইনজীবী আবিররঞ্জন নিয়োগীর সওয়াল, তাঁর মক্কেলরা চার বছর ধরে জেলে রয়েছেন। রাজ্য জুড়ে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় একাধিক মামলা দায়ের হয়। অনেক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট অভিযুক্তদের জামিন দিয়েছে। ফলে তাঁর মক্কেলদেরও জামিন দেওয়া হোক। অভিযুক্তদের আইনজীবীর আরও যুক্তি, উত্তম-খুনের মামলার তদন্ত শেষ করেছে সিবিআই। এমনকি, চার্জশিটও জমা দিয়েছে তারা। এই অবস্থায় তদন্তে কোনও প্রভাব খাটাতে পারবেন না তাঁর মক্কেলেরা। শুধুমাত্র বিচার শেষের কারণ দেখিয়ে অভিযুক্তদের জেলে আটকে রাখা ঠিক নয়। আইনজীবী আবিররঞ্জনের আবেদন, অভিযুক্ত ছয় তৃণমূল কর্মীকে জামিন দেওয়া হোক। আদালত অভিযুক্তদের ওই আবেদন মঞ্জুর করে।