—ফাইল চিত্র।
গড়ে প্রতিদিন ১০টি করে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ দায়ের হচ্ছে রাজ্যে। খোদ রাজ্যেরই দেওয়া এই হিসাব দেখে কড়া মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলে, ‘‘অশান্তি নিয়ে অনেক গুরুতর অভিযোগ এসেছে এবং আসছেও। আমরা এর বাস্তব চিত্রটি জানতে চাই।’’
হিংসার ঘটনায় আক্রান্তদের আইনজীবী শুক্রবার আদালতকে জানান, অনেকেই হিংসার ঘটনার পর থেকে ঘরছাড়া। আতঙ্কে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। আদালত সেই প্রসঙ্গেও বলে, ‘‘আমরা চাই মঙ্গলবারের মধ্যে সব ঘরছাড়া ব্যক্তি বাড়ি ফিরুন। যে সমস্ত এলাকা থেকে হিংসার অভিযোগ আসছে, সেই এলাকাগুলিতে আরও সক্রিয় হতে হবে পুলিশকে।’’ শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার মেয়াদও বাড়িয়ে দিয়েছে আদালত।
ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে রাজ্যে ১৯ জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখতে বলেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। পরে কলকাতা হাই কোর্ট সেই মেয়াদ বৃদ্ধি করেছিল ২১ জুন পর্যন্ত। মেয়াদ শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, রাজ্য থেকে এখনই কেন্দ্রীয় বাহিনী ফিরছে না। বরং আগামী বুধবার, অর্থাৎ ২৬ জুন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত মামলাটি শুক্রবার উঠেছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই কেন্দ্রের আইনজীবী আদালতকে জানান, রাজ্যের দেওয়া হিসাবই বলেছে, বিভিন্ন জেলা থেকে রোজ ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন অন্তত ১০টি করে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ দায়ের হচ্ছে রাজ্যে।
উদাহরণস্বরূপ কেন্দ্রের আইনজীবী জানান, ১২ জুন পর্যন্ত ৫৬০টি অভিযোগ এসেছিল ডিজির কাছে ইমেল মারফত। তার পরবর্তী ৬ দিনে অর্থাৎ ১৮ জুন পর্যন্ত সেই অভিযোগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫৯টি। অর্থাৎ পরিস্থিতি এখনও শুধরোয়নি। তাই রাজ্যে এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকা উচিত।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই আদালতকে রাজ্য বলেছিল, গত ১৮ জুন পর্যন্ত ডিজির কাছে ইমেল মারফত ভোট পরবর্তী হিংসার হিসাব সংক্রান্ত অভিযোগ এসেছে ৮৫৯টি। এর মধ্যে ২০৪টি ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ১৭০টি অভিযোগ গ্রাহ্য হয়নি। ৪৫টি অভিযোগ পরিবার সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের ঘটনা বলে চিহ্নিত হয়েছে। একই বিষয়ে একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে ২০০টি ঘটনায় এবং ১৪টি অভিযোগ এখনও স্ক্রুটিনি করে দেখা হচ্ছে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাবে রাজ্যের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যের অমতে এত দিন ধরে আদৌ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যায় কি না, তা দেখা দরকার।
বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত পুরনো রায়ের উদাহরণও টেনে আনা হয় আদালতে। কিন্তু কোনও পক্ষেরই যুক্তি শেষ পর্যন্ত অকাট্য মনে হয়নি আদালতের। শুক্রবার তাই শুনানি মুলতবি রাখে আদালত।
একই সঙ্গে আদালত জানায়, রাজ্য নিজেই যেখানে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগের হিসাব দিচ্ছে, তখন আদালত আপাতত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পূর্বনির্দেশ বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার পর্যন্ত ওই নির্দেশ বহাল রাখা হবে বলে জানিয়েছে আদালত। ফলে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার মেয়াদ বেড়েছে আরও ৫ দিন। অর্থাৎ ২৬ জুন পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy