বিজেপির পর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আইএসএফ। তবে আপাতত সেই সভা করার অনুমতি দিল না আদালত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, গত বছর রানি রাসমণি রোডে আইএসএফকে কর্মসূচি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অশান্তির অভিযোগ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আইএসএফ কর্মী-সমর্থকেরা। সেই ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে আদালতে আগে হলফনামা জমা দিতে হবে নওশাদ সিদ্দিকির দলকে। পাশাপাশি, গত বছরের ঘটনা থেকে নওশাদের দল কী শিক্ষা নিয়েছে, তা-ও আদালতে জানাতে হবে। পাশাপাশি, জানাতে হবে কর্মসূচির পরিকল্পনা এবং জমায়েত সংক্রান্ত বিষয়েও। আদালত জানিয়েছে, গত বছর যে পরিমাণ জমায়েত হয়েছিল রানি রাসমণি রোডের কর্মসূচিতে, আসন্ন কর্মসূচিতে তার থেকে কম সংখ্যক জমায়েত রাখতে হবে। তবে তার পরেও সভার অনুমতি মিলবে কি না তা স্পষ্ট করেনি আদালত।
পাশাপাশি, বুধবার আদালতে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করা নিয়ে আইএসএফের আবেদনের পাল্টা যুক্তি দিয়েছে রাজ্যও। রাজ্যের দাবি, যে দিন আইএসএফ কর্মসূচি করতে চাইছে আইএসএফ অর্থাৎ, ২১ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। একটি মিছিল যাওয়ার কথা রয়েছে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে দিয়ে। আগে থেকে অনুমতিও নেওয়া রয়েছে। আর সেই কারণেই পুলিশ আইএসএফকে ওই জায়গায় সভা করার অনুমতি দেয়নি বলে জানিয়েছে রাজ্য। তবে রাজ্য এ-ও জানিয়েছে, আইএসএফ চাইলে রামলীলা ময়দানে ওই কর্মসূচি পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন:
তবে আইএসএফের আইনজীবীর পাল্টা প্রশ্ন, ২১ জুলাই যদি তৃণমূলের আগে অন্য কোনও পক্ষ ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করার অনুমতি চায়, তা হলেও কি একই যুক্তি দেওয়া হবে? এর পরেই আদালত জানায়, ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে শুধু শাসকদল কেন, যে কোনও দল কর্মসূচি করতে পারে। তবে তা শৃঙ্খলা বজায় রেখে করতে হবে বলে স্পষ্ট করেছে আদালত।
পাশাপাশি, বুধবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানিয়েছেন, গত বছর রানি রামমণি রোডে আইএসএফের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে অশান্তি ছড়িয়েছিল, তা নিয়ে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে রাজ্য। জমা দেওয়া হয়েছে ঘটনার দিনের ছবি এবং ভিডিয়োও। বৃহস্পতিবার আবার আইএসএফের সভার মামলার শুনানি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিজেপির পর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় আইএসএফ। তাদের অভিযোগ, আগামী ২১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে তারা সেখানে কর্মসূচি করতে চাইলেও পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন:
সভার অনুমতি পেতে মঙ্গলবার হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল আইএসএফ। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন। বিচারপতি সেনগুপ্ত জানতে চান, ওই জায়গায় কি সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়? আইএসেফের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম তখন আদালতে জানান, ওই জায়গায় তৃণমূল সভা করে। তাঁর আরও বক্তব্য, কর্মসূচি করতে না দেওয়ার কারণ হিসাবে পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রানি রাসমণি রোডে গন্ডগোল হয়েছিল। আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা প্রকাশ করে অনুমতি দেওয়া যাবে না বলে পুলিশ লিখিত জানিয়ে দিয়েছে। সেই মামলারই শুনানি হল বুধবার।