Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta High Court

সন্দীপের আর্জি খারিজ, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে রাজি হল না কলকাতা হাই কোর্ট

বিচারপতি সরকারের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী এমন কোনও তথ্য দেখাতে পারেননি যা থেকে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বোঝা যায়। মামলাকারী কোনও অভিযুক্ত নন, তাই বর্তমান ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ প্রাসঙ্গিক নয়।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১৭
Share: Save:

আর জি কর কাণ্ডে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্ট। এই ঘটনায় সংবাদমাধ্যম যে সংবাদ প্রকাশ করছে তার উপরে সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারির আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। বুধবার সেই মামলায় বিচারপতি শম্পা সরকার মামলাকারীর আর্জি খারিজ করে দিয়ে জানান, এই পর্যায়ে সংবাদমাধ্যমের উপরে সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারির প্রয়োজন বোধ করছে না কোর্ট। কোনও নির্দিষ্ট সংবাদ নিয়ে আপত্তি থাকলে প্রেস কাউন্সিলের দ্বারস্থ হতে পারেন বা মানহানির মামলা করতে পারেন।

এ দিন বিচারপতি এ-ও জানান যে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত খবরে সন্দীপের ‘ভূমিকা’ নিয়ে কোনও আগাম সিদ্ধান্ত বা মন্তব্য প্রকাশ করা যাবে না। জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের কোনও ‘অ্যানিমেশন’ নাট্যরূপও প্রকাশ করা যাবে না। বস্তুগত সংবাদ পরিবেশন করতে হবে এবং সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করা যাবে না। সংবাদমাধ্যমকে ‘তদন্তকারী সংস্থার’ ভূমিকা নিতেও কার্যত নিষেধ করেছে কোর্ট। কোনও বিতর্ক বা আলোচনাসভার ক্ষেত্রে বক্তার মন্তব্য যে সংবাদমাধ্যমের মতামত নয়, সে ব্যাপারেও বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ দিতে হবে।

এ দিন শুনানিতে সন্দীপের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য ছিল, সংবাদমাধ্যম তাঁর মক্কেল সম্পর্কে ‘অসত্য’ এবং অবমাননাকর খবর প্রকাশ করছে। তার ফলে তদন্ত যেমন প্রভাবিত হচ্ছে তেমনই সন্দীপের সম্মানহানি হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে জনরোষও তৈরি হচ্ছে। এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড-এর আইনজীবী রত্নাঙ্ক বন্দ্যোপাধ্যায় কোর্টে জানান, এই ধরনের কোনও অভিযোগ থাকলে মামলাকারী প্রেস কাউন্সিলের দ্বারস্থ হতে পারেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সার্বিক নিষেধাজ্ঞা সংবিধান স্বীকৃত বাক-স্বাধীনতার পরিপন্থী। উপরন্ত, মামলার নথিতে এমন কোনও ইঙ্গিত নেই যে এবিপি সংস্থা কোনও ‘বিচারসভা’ (মিডিয়া ট্রায়াল) আয়োজন করেছে।

বিচারপতি সরকারের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী এমন কোনও তথ্য দেখাতে পারেননি যা থেকে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বোঝা যায়। মামলাকারী কোনও অভিযুক্ত নন, তাই বর্তমান ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ প্রাসঙ্গিক নয়। জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া নিয়েও সংবাদমাধ্যমে এখনও কোনও ‘উস্কানিমূলক’ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। গণতন্ত্রে সংবাদমাধ্যম যে ‘চতুর্থ স্তম্ভের’ ভূমিকা এবং মানুষকে সংবাদ পরিবেশনের কর্তব্য পালন করে তাও কোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। আর জি কর কাণ্ড বিশ্বের নজরে এসেছে, তাই এ ক্ষেত্রে মানুষের সংবাদমাধ্যমের কাছে তথ্য জানার অধিকার আছে বলেও কোর্ট এ দিন জানিয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE