কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ট্রামের ভাগ্য ঝুলে সুপ্রিম কোর্টে। তাই আপাতত শহরের ট্রামলাইন মামলার শুনানি মুলতুবি রাখল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই মামলাটি আপাতত শুনানির তালিকা থেকে বাদ রাখা হল। আগামী ২৫ মার্চ ওই মামলার অবস্থান শুনবে আদালত। তার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে হাই কোর্ট। শীর্ষ আদালত ওই মামলায় কী জানায়, তা শোনা হবে।
ট্রাম রক্ষার জন্য কী কী করণীয়, তা ঠিক করতে গত শুনানিতে হাই কোর্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিল। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, কলকাতার কোনও ট্রামলাইন বন্ধ করা যাবে না। আগে হাই কোর্টের নিযুক্ত কমিটি বিষয়টি পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবে। সেই রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সড়কপথ থেকে ট্রামলাইন সরানোর কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। আদালত জানিয়েছে, কলকাতার ঐতিহ্য ট্রামকে রক্ষা করতে সচেতন হতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। ট্রামলাইন তুলে দেওয়ার উপর হাই কোর্টের স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। সেই মামলা শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন।
উল্লেখ্য, এর আগেও এই মামলায় কলকাতায় ট্রামলাইন বুজিয়ে ফেলার কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। বলা হয়েছিল, ট্রামলাইন বুজিয়ে ফেলার ছবি-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্যকে জমা করতে হবে আদালতে। এর পর পুলিশ, পরিবহণ বিশেষজ্ঞ, কলকাতা পুরসভা, রাজ্য পরিবহণ নিগম-সহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল উচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ট্রাম সংরক্ষণের বিষয়ে পর্যালোচনা করে দেখবে ওই কমিটি। এরই মধ্যে আবার ওই মামলার শুনানিতে জানানো হয়, শহরের কয়েকটি এলাকায় ট্রামলাইন বন্ধের কাজ শুরু হয়েছে। যদিও রাজ্য জানায়, রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে ট্রামলাইন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন:
শহরের রাস্তায় ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল একটি নাগরিক সংগঠন। ঘটনায় একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ ছিল, রাস্তায় যাতে ট্রাম চলতে না পারে, তাই কালীঘাট, ভবানীপুর, জাজেস কোর্ট এবং খিদিরপুরে ট্রামলাইন পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। সেই শুনানিতে ট্রামলাইন বন্ধ না করার কড়া নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। তবে পরে সেই মামলা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ায় আপাতত হাই কোর্টে মামলার শুনানি হবে না।