‘উস্কানিমূলক মন্তব্য’ করছেন বিজেপি নেতা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। এমনই অভিযোগে দায়ের হয়েছিল মামলা। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট মামলায় মিঠুনকে রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের নির্দেশ, অভিনেতার বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ।
গত বছর নভেম্বরে শহরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কলকাতার ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টারে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ বৈঠকে ভাষণ দেন মিঠুন। অভিযোগ, সেখানে তিনি এমন কিছু মন্তব্য করেন, যা উস্কানিমূলক এবং তাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। এ নিয়ে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় জনৈক কৌশিক সাহা এফআইআর দায়ের করেন। মিঠুনকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ৮ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়। পাশাপাশি বৌবাজার থানাতেও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।
এফআইআর খারিজের আবেদন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মিঠুন। মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানিতে অভিনেতা-নেতাকে আগামী ২০ মে পর্যন্ত রক্ষাকবচ দিল আদালত।
আরও পড়ুন:
মামলার শুনানিতে বিচারপতি ঘোষ জানান, অভিনেতার বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না। তবে তাঁর বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে পুলিশ। মিঠুনকও তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু তিনি ‘বিপাকে পড়েন’ এমন কাজ করতে পারবেন না তদন্তকারীরা। আদালতের পর্যবেক্ষণ, দাদাসাহেব ফালকে প্রাপ্ত অভিনেতা মুম্বইয়ের স্থায়ী বাসিন্দা। সেখান থেকে কলকাতায় এসে সশরীরে হাজিরা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তাঁকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রশ্ন করতে পারবেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
মিঠুনের মামলায় হাই কোর্টের এ-ও পর্যবেক্ষণ, তাঁর ওই মন্তব্যের ফলে কোথাও গন্ডগোল হয়েছে এমন উদাহরণ নেই। তা নিয়ে কারও কোনও ক্ষতি হয়েছে, সেই দৃষ্টান্তও আদালতের সামনে তুলে ধরতে পারেনি পুলিশ। এমতাবস্থায় মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত শুনানির প্রয়োজন রয়েছে। মামলাকারী এবং রাজ্য দু’পক্ষকে ওই বিষয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে। আগামী মে মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
বস্তুত, এর আগেও নানা মন্তব্যের জন্য মিঠুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের প্রচারে নিজের অভিনীত ছবির সংলাপ আউড়ে হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সে বারও আদালতে ওঠে মামলা। তদন্তে স্থগিতাদেশ জারি করে আদালত জানিয়েছিল, সভা থেকে সিনেমার মন্তব্য করা কোনও অপরাধ নয়। অনেক নেতা সভা থেকে ‘শোলে’ সিনেমার সংলাপ বলেন। একই ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যায় না।