এ বার ‘যুদ্ধ’ যাদবপুরে।
তিন বছরের পরে ছাত্র ভোট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯ ফেব্রুয়ারি। শেষবেলার প্রচার-পোস্টারে তাই এখন জমজমাট ক্যাম্পাস।
ইস্তাহারে যা-ই লেখা থাক, প্রায় সব দলেরই প্রচারের একটা বড় অংশ জুড়ে নজর কাড়ছে এনআরসি-এনপিআর-সিএএ। ক্যাম্পাসে পুলিশি জুলুম, দেশের আর্থিক পরিস্থিতির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতিও। কলা বিভাগে ছাত্র সংগঠন ফ্যাস পোস্টার দিয়েছে, ‘মোদীর বুকে নাথুরাম, আমাদের বুকে ক্ষুদিরাম’। কয়েক পা ফেলতেই, এসএফআইয়ের পোস্টার— ‘ভাত দে হারামজাদা, না হলে মানচিত্র ছিঁড়ে খাব’। ডিএসও লিখছে, ‘ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু’। এমন কিছু পোস্টার দিয়েছে আইসা, টিএমসিপি-ও।
এ বছরই প্রথম প্রার্থী দেওয়া এবিভিপি বলছে, ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের দাবিদাওয়া নিয়েই লড়বে তারা। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কলা বিভাগের প্রায় সবক’টি কার্যনির্বাহী পদে প্রার্থী দিয়েছে এবিভিপি। প্রায় ১৫০ ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ পদেও লড়বে তারা। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের কাছেই (ফেটসু) কার্যনির্বাহী পদে প্রার্থীদের নিয়ে পোস্টার দিয়েছে এবিভিপি। তার পাশেই কে বা কারা লিখে রেখেছে— ‘আও ভাই বিদ্যার্থী পিটে!’ জেএনইউয়ে পড়ুয়া-পেটানোর ঘটনায় অভিযোগ ওঠার পর থেকে এবিভিপির ‘ফুল ফর্ম’ হিসেবে এই শব্দবন্ধই ঘুরছে মুখে-মুখে। এখন যাদবপুর ক্যাম্পাসেও।
তা-হলে কি ভোটের আগেই ‘ব্রাত্য’ এবিভিপি? ডিএসএফের চেয়ারপার্সন পদপ্রার্থী অরিত্র মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘ভোটে যে কেউ দাঁড়াতে পারে। কিন্তু এবিভিপি দাগই কাটতে পারবে না।’’ এ বার ‘আদর্শগত লড়াই হবে’ বলে তাঁর অভিযোগ, ভোট করাতে বাইরের থেকে লোক আনছে এবিভিপি। এবিভিপি প্রার্থী নিখিল দাস অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়েই বলছেন, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রথম বারেই ভাল ফল করবে এবিভিপি।
জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ গত শুক্রবার ক্যাম্পাসের বাইরে সভা করে যাওয়ার পর থেকে উৎসাহে ফুটছে এসএফআই-ও। এবিভিপির শুভদীপ কর্মকার অবশ্য ঐশী আসায় বাম-পালে হাওয়া লাগল, তা মানতে নারাজ। এর পাল্টা বিদায়ী ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথ বললেন, ‘‘বিজেপি, আরএসএস, এবিভিপি যা করছে, তাতে কেউই এদের ভোট দিতে চাইবে না।’’