জয়ের পর দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে উচ্ছ্বাস তৃণমূল কর্মীদের। ছবি: প্রদীপ সরকারের ফেসবুক
বিজেপির পরীক্ষা ছিল এনআরসি নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে লোকসভার সাফল্য ধরে রাখা। আর তৃণমূলের, লোকসভার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনের পরীক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল শুধু পাশই করল না, ফুল মার্কস নিয়ে ফিরল। তিন কেন্দ্রেই তৃণমূল ঝড়। অন্য দিকে, উপনির্বাচনের ফলে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেল পদ্ম শিবির।
মাত্র ছ’মাস আগের ছবিটাই পাল্টে গেল তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে। তিনটি কেন্দ্রেই অভাবনীয় সাফল্য তৃণমূলের। উল্টে বিজেপির ফল শুধু খারাপই নয়, হাতছাড়া হল দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জেতা আসনও। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ ছিল কংগ্রেসের দখলে। এ বছর লোকসভায় বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। খড়্গপুর সদর কেন্দ্রে ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে জিতেছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। লোকসভাতেও এগিয়ে ছিল বিজেপি। কিন্তু দুই কেন্দ্রেই সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে জয় পেল তৃণমূল। প্রথম বারের জন্য কালিয়াগঞ্জ ও খড়্গপুরের দখল পেল তারা। করিমপুর কেন্দ্রে জয়ের ব্যবধানও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
খড়্গপুর সদর কেন্দ্র ছিল বিজেপির ‘প্রেস্টিজ ফাইট’। কারণ এটি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছেড়ে যাওয়া আসন। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত কিছুটা চমকে দিয়েই এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন দিলীপ। জয়ের ব্যবধান ছিল ৬ হাজার ৩০৯। এ বছরের মে-জুনে লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হন তিনি। জিতে সাংসদ হয়েছেন দিলীপবাবু। লোকসভার নিরিখে খড়্গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রে দিলীপবাবু এগিয়ে ছিলেন ৪৫ হাজার ১৩২ ভোটে। কিন্তু সেই কেন্দ্রেই কার্যত ভরাডুবি হল বিজেপির। রাজ্য সভাপতির জেতা আসনও ধরে রাখতে ব্যর্থ হল পদ্ম শিবির। এ বার তৃণমূল প্রার্থী জিতেছেন ২০ হাজার ৮১১ ভোটে। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি।
এ বছর লোকসভা ভোটে গোটা উত্তরবঙ্গে একটি আসনও পায়নি তৃণমূল। আটটির মধ্যে সাতটই ছিল বিজেপির দখলে। একটি কংগ্রেসের। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে জিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন দেবশ্রী চৌধুরী। ওই রায়গঞ্জের অন্তর্গত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার নিরিখে দেবশ্রী চৌধুরী এগিয়ে ছিলেন ৫৬ হাজার ৭৬২ ভোটে। তার আগে ২০১৬ সালে অবশ্য এই বিধানসভা কেন্দ্রটি ছিল কংগ্রেসের দখলে। এ বার সেই দুর্গেও থাবা বসাল তৃণমূল। ২ হাজার ৪১৮ ভোটে জয় পেলেন তৃণমূল প্রার্থী তপন দেব সিংহ। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকার।
আরও পড়ুন: ঘাসফুল ঝড়ে উড়ে গেল পদ্ম, খড়গপুর-কালিয়াগঞ্জ ছিনিয়ে নিল তৃণমূল, করিমপুরে বাড়ল ব্যবধান
আরও পড়ুন: বিজেপির ‘ঔদ্ধত্য-অহংকার’ মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি, উপনির্বাচনের ফল স্পষ্ট হতেই তোপ মমতার
ভোটের দিন বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদার আক্রান্ত হওয়ার খবরে শিরোনামে এসেছিল নদিয়ার করিমপুর। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই কেন্দ্রে জয় আসবে, এমনটা আশা করেননি বিজেপি নেতৃত্বও। তবে ব্যবধান কমতে পারে এমন আশায় ছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু সেখানেও অপ্রত্যাশিত সাফল্য তৃণমূলের। দলীয় প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহ রায় জিতলেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র জিতেছিলেন ১৫ হাজার ৯৮৯ ভোটে। এ বছর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ব্যবধান সামান্য কমে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৩৪০। উপনির্বাচনে যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy