দু'বোনকে খুনে অভিযুক্ত বিধানচন্দ্র পাল। —নিজস্ব চিত্র।
পৈতৃক সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বোনকে গলা টিপে খুন করার অভিযোগ উঠল দাদার বিরুদ্ধে। মাস দেড়েক আগে আর এক বোনকেও খুনের অভিযোগ করেছেন অভিযুক্তের এক আত্মীয়-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এই অভিযোগে সোমবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার বার্নপুরের ওই ব্যক্তি-সহ স্থানীয় এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দু’জনেরই ৬ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, হিরাপুর থানার অন্তর্গত সাঁতাডাঙার সারদাপল্লির বাসিন্দা বিধানচন্দ্র পালের বিরুদ্ধে দু’বোনকে খুনের অভিযোগ করেছেন তাঁর খুড়তুতো ভাই প্রণব পাল। বুধবার বিধানের বোন সীমা পালের (৪৫) দেহ সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার সময় অভিযুক্তকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলে আটকান প্রণব। এর পর সীমার মৃত্যুর তদন্ত দাবি করে হিরাপুর থানায় খবর দেন তাঁরা। খবর পেয়ে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায় যে সীমাকে গলা টিপে খুন করা হয়েছে। তদন্তে নেমে বিধানকে জেরা শুরু করে পুলিশ। জেরায় তাঁর কথাবার্তায় অসামঞ্জস্য থাকায় বিধানকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা।
পুলিশের কাছে প্রণবের অভিযোগ, বিধান অনলাইন জুয়ার নেশায় আসক্ত। মাস দেড়েক আগে বিধানের আর এক বোন শম্পা পালের (৪৮) মৃত্যু নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। প্রণব জানিয়েছেন, বিধানের মতোই দু’বোন বিয়ে করেননি। তাঁর কথায়, “সারদাপল্লিতে জ্যাঠা প্রভাকর পালের তিনতলা একটি বাড়ি রয়েছে। মাসখানেক আগে জানতে পারি, জ্যাঠার বড় মেয়ে শম্পার মৃত্যুর পর গভীর রাতে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে সৎকার করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশীদের বিধান জানায়, শম্পা নিখোঁজ। এর পর বলে, সে মারা গিয়েছে।” প্রণব জানিয়েছেন, ২৬ মে সকালে খবর পান, বিধানের বাড়ির সামনে একটি গাড়িতে কোনও মৃতদেহ তোলা হবে। তিনি বলেন, “আমি এসে দেখি দিদির (সীমা) দেহ গাড়িতে তোলা হচ্ছে। সকলে মিলে সে গাড়ি আটকে হিরাপুর থানার পুলিশকে খবর দিই। বিধানের দাবি,অসুস্থ অবস্থায় দিদি মারা গিয়েছে।” তবে মাস দেড়েকের মধ্যে দুই দিদির কী ভাবে মৃত্যু হয়, সে প্রশ্ন তাঁর।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, বিধানের দু’বোনেরই মৃত্যুর শংসাপত্র লিখেছিলেন স্থানীয় এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক তাপস সেন। তাঁকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্তদের আসানসোল আদালতে তোলার পর পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সীমাকে শ্বাসরোধ করে বিধানই খুন করেছেন বলে জানতে পেরেছেন তাঁরা। শুধু তা-ই নয়, গত ১৪ এপ্রিল শম্পাকেও খুন করেছেন বলে পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছেন বিধান।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (হিরাপুর) প্রতীক রায় বলেন, “সীমা পালের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর দাদা ও এক চিকিৎসককে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়।” যদিও আদালতের বাইরে অভিযোগ অস্বীকার করেন বিধান। তিনি বলেন, “পাড়ার লোক বলছে, সম্পত্তির লোভে আমি বোনেদের খুন করেছি। মা-বাবাকে খুন করেছি বলছে। আমার কাছে তো ওঁদের ডেথ সার্টিফিকেট রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy