হাসপাতালে যেতে তাঁর বরাবরের অনীহা। সিওপিডি-জনিত শ্বাসকষ্টের সমস্যা যতই তীব্র হোক, পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে দু’কামরার ফ্ল্যাটে থাকাই তাঁর পছন্দ। কিন্তু এ বার সমস্যা এমনই ঘনীভূত যে, হাসপাতালে ভর্তি করাতে হল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। তবে ঘণ্টাখানেকের চিকিৎসায় একটু উপশম মিলতেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলতে শুরু করেছেন, তিনি বাড়ি যেতে চান। যদিও রাতেই তাঁকে রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন চিকিৎসকেরা।
বুদ্ধবাবুর স্বাস্থ্য-সঙ্কটের খবর পেয়েই শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএমের নেতারাও তখনও হাসপাতালে পৌঁছে উঠতে পারেননি! তবে বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও কন্যা সুচেতনা সেখানেই ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পরে হাসপাতালে আসেন রাজ্যরপাল জগদীপ ধনখড়। যিনি গত সপ্তাহেই বুদ্ধবাবুর বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
প্রাত্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসায় যাতে কোনও খামতি না থাকে, তা নিয়ে হাসপাতালে বসে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। দ্রুত গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে রুপালি বসু রাতে জানিয়েছেন, বুদ্ধবাবুর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তবে আরও সময় নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে মমতাও বলেন, ‘‘হিমোগ্লোবিন কম আছে বলে রক্ত দিতে হচ্ছে ওঁকে। তবে যখন আনা হয়েছিল, তার চেয়ে এখন একটু ভাল আছেন। উঠে বসে কথাও বলছেন।’’
উদ্বিগ্ন: হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
পারিবারিক ও দলীয় সূত্রের খবর, বুদ্ধবাবুর শরীর অন্যান্য দিনের তুলনায় খারাপ হচ্ছিল বৃহস্পতিবার থেকেই। দলের নেতা ও চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম গিয়ে জোর করে এ দিন বুদ্ধবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তখন প্রবল শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর রক্তচাপও খুব কম। হাসপাতালে নিয়ে এসে দেখা যায়, কোনও ওষুধের জেরে বুদ্ধবাবুর শরীরের ভিতরে বেশ খানিকটা রক্তক্ষয় হয়েছে। সেই কারণেই বাইরে থেকে রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা। প্রায় আড়াই দশক আগে একটি ছোট অস্ত্রোপচারের জন্য এসএসকেএমে ভর্তি হয়েছিলেন তৎকালীন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বুদ্ধবাবু। তার পরে হাসপাতাল-যাত্রা এই প্রথম।
হাসপাতালে গিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, দলের নেতা মহম্মদ সেলিম ও রবীন দেব এবং কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও। রাতে সেলিম বলেন, ‘‘দুশ্চিন্তার কারণ নেই। বুদ্ধদা’র অবস্থা এখন আগের চেয়ে স্থিতিশীল। তাঁর চিকিৎসার সব রকম ব্যবস্থা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy