উত্তরবঙ্গ জুড়েই রয়েছে আন্তর্জাতিক সীমান্ত। তার পুরোটাই জুড়ে কড়া সতর্কতা জারি করেছে বিএসএফ ও পুলিশ। বুধবারই জলপাইগুড়িতে একটি অনুষ্ঠানে আসেন বিএসএফের ১৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের আধিকারিকেরা এসে জানিয়ে দেন, সীমান্তরতক্ষী বাহিনীর বিভিন্ন স্তরে ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
সতর্কতা অবশ্য কেবল সীমান্তে নয়, সর্বত্রই বাড়ানো হয়েছে। যে কোনও গাড়ি সন্দেহভাজন মনে হলেই থামিয়ে তল্লাসি চালানো হচ্ছে।
উত্তর দিনাজপুর জেলায় মোট ২২৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। ইটাহার ও চাকুলিয়া ব্লক বাদে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া ও গোয়ালপোখর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় সীমান্ত রয়েছে। পুলিশ ও বিএসএফ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এ দিন সকাল থেকে অনুপ্রবেশ ও জঙ্গিহানা রুখতে সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু করেছে বিএসএফ। প্রতি এক কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় চার থেকে পাঁচ জন করে বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিএসএফের আরেকদল জওয়ান সাইকেলে চেপে দূরবীনের মাধ্যমে নজরদারি শুরু করেছেন। গোয়ালপোখরের সীমান্ত এলাকায় ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত তিন মাসে জেলার রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের অবশ্য দাবি, ওই অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে জঙ্গিদের কোনও যোগ নেই। তাঁরা দিল্লি ও মুম্বইতে দিন মজুরির কাজ করতে যাওয়ার জন্য অবৈধ ভাবে সীমান্ত টপকে এদেশে ঢুকেছিল। এ ছাড়াও কয়েক মাস আগে হেমতাবাদের সীমান্ত এলাকা থেকে শতাধিক বোতলভর্তি কাশির সিরাফ সহ এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাশাপাশি, গোয়ালপোখর ও করণদিঘি থানার ৩১ ও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ট্রাকে চাপিয়ে পাচারের সময়ে ২০টি গরু আটক করে। পাচারের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতারও করা হয়।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তিন দিক বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঘেরা। বৃহস্পতিবার সকালের পর থেকে বাংলাদেশের কিছু এলাকায় লুকিয়ে থাকা পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের গতিবিধির উপর বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সরকার। ওপার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে জঙ্গি হানা রোধে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী—বিএসএফ এবং বিজিবি সমন্বয় করে সীমান্ত এলাকায় টহল এবং নজরদারি বাড়িয়েছে।
গত দু’দিন ধরে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে বিএসএফ এবং বিজিবি-র মধ্যে যৌথ অনুশীলনের মাধ্যমে ওই প্রক্রিয়াকে আরও সুদৃঢ করা হয়েছে। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার হিলিতে পদস্থ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুদেশের সীমান্তের চোরাপথ দিয়ে অবৈধ পারাপার নজরে এলে ফাঁড়ি স্তরে পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ রেখে দ্রুত অনুপ্রবেশকারীকে ধরতে তল্লাশি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy