লাভপুরে মৃত বিজেপি কর্মী। —ফাইল চিত্র
পুরুলিয়ার সুপুরডির ছায়া এবার বীরভূমের লাভপুরে। ফের বিজেপি কর্মীকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এ বার দাঁড়কা গ্রামে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হল তাপস বাগদী (৩৩) নামে এক সক্রিয় বিজেপি কর্মীর দেহ। বিজেপির স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজনই খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে দেহ। দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘খুন করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চলছে।’’ দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ান্তন বসুর অভিযোগ, ‘‘খুনের পিছনে তৃণমূল রয়েছে বলেই আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আমরা আন্দোলনে নামব।’’ যদিও খুনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর দাবি, ‘‘লাভপুরে যেটা ঘটেছে, সেটা সুইসাইড কেস। ও এর আগেও দু’বার আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল। গতকালই ওঁর বাড়ির লোকজন স্বীকার করে নিয়েছেন এটা আত্মহত্যার ঘটনা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, পুজোর পর থেকে গ্রামে উত্তেজনা ছড়ানোয় বাড়িছাড়া থাকার পর রবিবার দুপুরেই বাড়ি ফিরেছিলেন তাপস বাগদী। বিকেলের দিকে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু রাতেও ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও না পেয়ে ফিরে আসেন। গভীর রাতে গ্রামের আশপাশে ফের খুঁজতে শুরু করেন পাড়া প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা। তখনই গ্রাম লাগোয়া বনসৃজনের প্রকল্পের জঙ্গলে একটি গাছে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। তবে ঘটনাস্থলের কাছে কোনও পোস্টার বা অন্য কিছু পাওয়া যায়নি। পরিবারের অভিযোগ, তাপসকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ যদিও জানিয়েছে, লিখিত কোনও অভিযোগ তারা পাননি। তদন্ত চলছে।
গাছ থেকে নামানোর পর তাপস বাগদীর দেহ। —নিজস্ব চিত্র
আরও খবর: চোয়াল ফুঁড়ে গুলি, আক্রান্ত ব্লক সভাপতি
স্থানীয় সূত্রে খবর, তাপস বাগদী পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বিজেপিতে যোগ দেন। গত কয়েক দিন ধরেই দাঁড়কা-সহ সংলগ্ন গ্রামগুলিতে তৃণমূল-ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষ চলছিল। চাপা উত্তেজনাও ছিল এলাকায়। তার জেরে তাপস ও তাঁর দুই ভাই বাড়িছাড়া ছিলেন। রবিবারই বাড়ি ফেরেন তাপস।
আরও পড়ুন: ‘ওরা কিন্তু ভুল করছে, আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলব না’, শাসানি অনুব্রতর
গত ৩০ মে পুরুলিয়ার সুপুরডি গ্রামে এক বিজেপি কর্মীকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার কয়েক দিন পরই হাই টেনশন লাইনের পিলারে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় আরও এক বিজেপি কর্মীর দেহ। ওই দুই ঘটনা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়ায়। অন্যদিকে রবিবারই খয়রাশোলে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষকে কুপিয়ে ও গুলি করে খুনের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ ওঠে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। তার পরের দিনই বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে ফের বীরভূমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy