নতুন ট্রেন শেষ পর্যন্ত কোন নেতাকে খুশি করবে! গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শুক্রবার বাংলার প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু হবে। এমনিতে ওই দ্রুতগামী ট্রেনের রুট হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি। মাঝখানে থামার কথা শুধু মালদহ স্টেশনে। অর্থাৎ, যাত্রাপথের মাঝামাঝি।
কিন্তু সে তো সাধারণ যাত্রা। উদ্বোধনের যাত্রার তাৎপর্য তো অন্যরকম। হাওড়া স্টেশনে হাজির থাকবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। থাকবেন রাজ্য দলের তাবড় নেতারা। দলের বেশিরভাগ সাংসদ, বিধায়ককে হাওড়ায় হাজির হতে বলা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বাছাই সাংসদ ও বিধায়কদের প্রথম ট্রেনের সওয়ারি হতেও দলের তরফে নির্দেশ গিয়েছে বলে খবর। যদিও রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রথম ট্রেনটিতে কোনও ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ থাকবেন না।
কিন্তু রেল যা-ই বলুক, বিজেপির সাংসদ-বিধায়কেরা ট্রেনে চড়তে (আসলে বন্দে ভারত থেকে রাজনৈতিক ফসল কেটে নিতে) আগ্রহী। কিন্তু শুধু চড়লেই তো হবে না! ট্রেন থেকে নিজের নিজের এলাকায় সগর্বে নামতেও হবে। তাই আব্দার শুরু হয়েছে বিভিন্ন স্টেশনে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দাঁড় করানোর।
উত্তরবঙ্গের বিজেপি সাংসদদের অনেক দিনের দাবি ছিল রাজ্যে একটা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। অনেকেই রেলমন্ত্রীর কাছে ওই বিষয়ে দরবার করেছিলেন। সেই ‘স্বপ্নপূরণের দিন’ নিজের নিজের এলাকার ভোটারদের সামনে তাই কৃতিত্ব প্রকাশের ইচ্ছা অনেকের। তবে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রেলের সঙ্গে কথা বলেই যাবতীয় ঠিক হবে। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোন সাংসদ বা কোন বিধায়ক কোথায় থাকবেন, তা ঠিক করা।
তবে সাংসদ-বিধায়কদের আলাদা ব্যবস্থা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি রেল। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বুধবার বলেন, ‘‘৩০ তারিখের বন্দে ভারত ট্রেনের ভিতর কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থাকবেন না। প্রধানমন্ত্রী ট্রেনটির যাত্রা সূচনা করার পর সেটি শক্তিগড়, বর্ধমান, বোলপুরের মতো একাধিক স্টেশনে দাঁড়াবে। সেখানে যে কেউ থাকতে পারেন। ট্রেনটি কোথায় কোথায় দাঁড়াবে, সে ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার জানানো হবে।’’
হাওড়া থেকে ছাড়ার পরে ট্রেনটি হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এলাকা ছুঁয়ে যাবে। সব ঠিক থাকলে ট্রেনে চাপবেন লকেট। নামবেন নিজের এলাকার স্টেশন কামারকুণ্ডুতে। সরাসরি তাঁদের এলাকায় ট্রেন পাবেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ এসএস অহলুওয়ালিয়া, উত্তর মালদহের খগেন মুর্মু, বালুরঘাটের সুকান্ত মজুমদার, রায়গঞ্জের দেবশ্রী চৌধুরী এবং দার্জিলিঙের রাজু বিস্তা। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত বলেন, ‘‘সকলেই ট্রেনে চড়বেন তা নয়। অনেকেই শুধু হাওড়ার অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গের কয়েকজন সাংসদ ও বিধায়ক ট্রেনে উঠবেন। বাকি অনেককেই নিজের নিজের এলাকায় বন্দে ভারতে স্বাগত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
সাংসদ বা বিধায়ক দুইয়ের হিসাবেই দক্ষিণের তুলনায় বিজেপির শক্তি বেশি উত্তরবঙ্গে। বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক তথা ফালাকাটার বিধায়ক মনোজ টিগ্গা এখনও ঠিক করেননি ট্রেনে উঠবেন কি না। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘দল যা নির্দেশ দেবে তাই করব। তবে উত্তরবঙ্গের অনেকেই ট্রেনে করে যাবেন।’’ মনোজ অবশ্য বৃহস্পতিবারই কলকাতা আসার জন্য বেরিয়ে পড়েছেন। মালদহের ইংরেজবাজারের বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী অবশ্য শুক্রবার সকালেই কলকাতায় আসবেন। তিনি বন্দে ভারতে চেপেই মালদহে যেতে চান। শ্রীরূপা বলেন, ‘‘বাংলা যে এমন একটা উন্নতমানের ট্রেন পেয়েছে, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এটা মালদহবাসীর বড় পাওনা।’’ শ্রীরূপার পাশাপাশি মালদহের বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহাও ট্রেনে উঠবেন। থাকবেন সাংসদ খগেন মুর্মুও। ট্রেনে থাকতে পারেন মালদহ জেলার বিধায়ক তন্ময় দেববর্মন, জোয়েল মুর্মু, বুধুরাম টুডুরাও। তবে বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ি ট্রেনে না চেপে শুধু হাওড়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই থাকতে চান।
শুক্রবার সকালে হাওড়ায় না আসারই কথা দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার। নিজের এলাকায় প্রথম দিন বন্দে ভারতকে স্বাগত জানাতে তিনি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে হাজির থাকতে চান। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ একেবারেই থাকতে পারছেন না। অনেক আগের পরিকল্পনা মতো তিনি ভিন্রাজ্যে সপরিবারে বেড়াতে গিয়েছেন। সুকান্তের মতোই ট্রেনে না চেপে মোদীর অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy