Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Locket chatterjee

ত্রাণ বিলিতেই পরিত্রাণ খুঁজছে বিজেপি, ইয়াস বিপর্যয়ের কাঁধে ভর ভোটে বিপর্যস্ত বাহিনীর

গত মঙ্গলবার জেপি নড্ডা একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। জানা গিয়েছে, সেখানেই ইয়াসের পরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়।

ইয়াস দুর্গতদের ত্রাণ বিলির কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে যেন নিজেদের পরিত্রাণ খুঁজছে রাজ্য বিজেপি।

ইয়াস দুর্গতদের ত্রাণ বিলির কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে যেন নিজেদের পরিত্রাণ খুঁজছে রাজ্য বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২১ ১৮:৫০
Share: Save:

ইয়াস দুর্গতদের ত্রাণ বিলির কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে যেন নিজেদের পরিত্রাণ খুঁজছে রাজ্য বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যস্ত হওয়ার পর থেকে অধিকাংশ নেতাকর্মীই ঘরবন্দি নয়ত চুপচাপ। এঁদের রাজনীতির ময়দানে ফেরাতে তাই ইয়াস ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ত্রাণকাজকে কাজে লাগাতে চাইছেন রাজ্য বিজেপি-র শীর্ষনেতৃত্ব। দিল্লিরও নির্দেশ সে রকমই। নেতাদের সকলকেই ত্রাণকাজে জায়গায় জায়গায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এলাকা অনুসারে কর্মীদের সক্রিয় করে তুলতে বলা হয়েছে। এই পর্যায়ে জেলা সফরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও।

‘ইস বার দোশো পার’ স্লোগান তুলে ৭৭-এ আটকে যাওয়া বিজেপি ২ মে ভোটগণনার পর থেকেই থেকে কার্যত বিপর্যস্ত। নীলবাড়ি দখলের স্বপ্নভঙ্গ হওয়ায় দলের নেতা থেকে কর্মী সকলেই যেন দিশেহারা। ভোট পরবর্তী গোলমাল নিয়ে সরব হলেও তেমন করে কোনও আন্দোলন দানা বাঁধেনি। সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা রাজ্যে এসেছেন। কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। তবে কোনওটাই সে ভাবে মানসিক ভাবে দলকে চাঙ্গা করতে পারেনি। এর পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে নানা বিধিনিষেধের জন্য ভার্চুয়াল বৈঠক ছাড়া কোনও উপায় না থাকায়, নেতারাও যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে যান। এ রাজ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিনরাজ্যের নেতারা যে যাঁর নিজের ঠিকানায় চলে গিয়েছেন আগেই।

সেই দশা কাটিয়ে এ বার পথে নামতে উদ্যোগী বিজেপি। ইয়াস মোকাবিলায় কোন পথে কাজ করতে হবে তা নিয়ে গত মঙ্গলবার নড্ডা একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন রাজ্য বিজেপি-র পদাধিকারীদের সঙ্গে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেই রাজ্য নেতাদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে ত্রাণ বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই চাপে ঘূর্ণিঝড়ের দিন থেকে কোনও কোনও এলাকায় বিজেপি সক্রিয় হয়। গত শুক্রবার থেকে দলের বিধায়কদের সর্বত্র কাজে নামতে নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন আকাশপথে পূর্ব মেদিনীপুরের প্লাবন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন তখন দিলীপও ছিলেন ওই জেলায়। শুক্রবার হলদিয়া, মহিষাদল, তমলুকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ বিলিতে অংশ নেন তিনি। শনিবার তাঁর ত্রাণ বিলির কর্মসূচি রয়েছে খেজুরি, কাঁথি, রামনগর-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায়।

শুধু দিলীপই নন, পথে নামতে বলা হয়েছে অন্যান্য পদাধিকারী এবং জনপ্রতিনিধিদেরও। শনিবার রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক তথা হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় নিজের লোকসভা এলাকায় গিয়েছেন। একই ভাবে মালদহ জেলার বিপর্যস্ত এলাকায় ত্রাণ বিলিতে নেমেছেন সাংসদ খগেন মুর্মু। ময়নার বিধায়ক অশোক ডিন্ডা, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, সোনামুখীর দিবাকর ঘরামি, গাইঘাটার সুব্রত ঠাকুরকে ত্রাণ বিলিতে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্য স্তরের অন্যান্য নেতা এবং পরাজিত প্রার্থীদেরও নিজের নিজের বিধানসভা এলাকায় ত্রাণ বিলি শুরু করতে বলা হয়েছে।

এই ত্রাণ বিলির মাধ্যমে বিজেপি পরিত্রাণ খুঁজছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘আমাদের ত্রাণ অনেক আগে থেকেই চলছিল। লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেও ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের জন্য জেলায় জেলায় ত্রাণ শিবির চালাতে হচ্ছে। সমাজের যে কোনও প্রয়োজনে বিজেপি যে এগিয়ে আসে তার নজির অতীতেও মানুষ দেখেছে। আমপানের সময়ে অনেক বাধার মধ্যে আমরা ত্রাণ বিলি করেছি।’’ আমপানের সময় বিজেপি যে ভাবে বাধার অভিযোগ করেছিল সেটা অবশ্য এ বার সে ভাবে নেই। যদিও দিলীপের অভিযোগ, ‘‘অনেক জায়গায় বাধার মুখে পড়তে হয়েছে এবং হচ্ছে। শুক্রবারই রুদ্রনীল ঘোষকে ভবানীপুরে মারধর করা হয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy