Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

ফুটবলের ময়দানেও বিজেপি

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের বিপুল সংখ্যক সমর্থকের আবেগকে কাজে লাগাতে বিজেপি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার ছক কষতে পারে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০৪:৫৭
Share: Save:

টলিউডের পরে এ বার ময়দান।

শতাব্দী প্রাচীন কলকাতার দুই ক্লাব মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলকে দেশের সর্বোচ্চ লিগে খেলানোর দাবিকে সামনে রেখে খেলার মাঠে পা রাখার চেষ্টা শুরু করল বিজেপি।

কলকাতার দুই প্রধানকে দেশের সর্বোচ্চ লিগ থেকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইন্ডিয়ান সুপার লিগকে দেশের সর্বোচ্চ লিগ করে দেওয়া হবে। যে প্রতিযোগিতায় কলকাতার দুই প্রধান খেলেই না। ভারতীয় ফুটবলের দীর্ঘ ইতিহাসে নজিরবিহীন এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘হস্তক্ষেপ’ করতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের শরণাপন্ন হলেন দুই প্রধানের কর্তারা। চাইলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সক্রিয়’ সহযোগিতা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের বিপুল সংখ্যক সমর্থকের আবেগকে কাজে লাগাতে বিজেপি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার ছক কষতে পারে। তবে তৃণমূল খেলার মাঠে এই রাজনীতির বিরোধিতা করে বলেছে, ক্রীড়ামোদীরা এটা মেনে নেবেন না।

শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার এক ক্লাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে যান মোহনবাগানের সহসচিব সৃঞ্জয় বসু, অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত, ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার এবং সহসচিব শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত। এই বৈঠকের আয়োজক ছিলেন লোকসভায় পরাজিত বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবে।

বিষয়টি নিয়ে এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছিল ক্লাবগুলি। কাজ হয়নি। ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। তার পর এ দিন বিজেপি নেতৃত্বকে ধরে কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘সক্রিয়’ করার জন্য ক্লাবগুলির এই পদক্ষেপ।

সভার পর কৈলাসও বলেন, ‘‘বাংলা এবং ফুটবল সমার্থক। দুই ক্লাবের দাবির যুক্তি আছে। তারা যাতে শীর্ষ লিগে খেলতে পারে তার জন্য যা করার করব। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। সভার ব্যবস্থা করছি।’’

টালিগঞ্জের সিনেমা পাড়ায় তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্যে থাবা বসাতে লোকসভা ভোটের পরেই সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। ময়দানের বিভিন্ন ক্লাবেও তৃণমূলেরই প্রভাব। গত বছর তাদের দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দুই প্রধানের কর্তারা। ফ্লাড লাইট-সহ বিভিন্ন ভাবে দুই প্রধানকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে রাজ্য সরকার। সেই আবহে হঠাৎ-ই বিজেপি ঢুকে পড়ায় ময়দান জুড়ে আলোড়ন।

রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘খেলার মাঠে রাজনীতির সংস্কৃতি আমাদের নেই। দুই প্রধান যখন যে সাহায্য চেয়েছে, করেছি। খবর আছে যাঁরা গিয়েছিলেন তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই গিয়েছিলেন।’’

বৈঠকের আয়োজক কল্যাণ এই চেষ্টার মধ্যে রাজনীতি আছে মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘দুই প্রধানে বহুদিন খেলেছি। একটা আবেগ আছে। সেই ক্লাবগুলির সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। সেটা দেখেই কৈলাসজি ও দিল্লির নেতৃত্বকে বলেছিলাম ব্যাপারটা দেখতে।’’ ক্লাব কর্তারাও এর মধ্যে রাজনীতি রয়েছে, তা মানতে নারাজ।

প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য অবশ্য বিজেপি ও ক্লাব কর্তাদের এক হাত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ক্লাবের আবেগকে সামনে রেখে কিছু কর্তা নিজেদের স্বার্থে বিজেপির দ্বারস্থ হয়েছেন। এটা অন্যায়। তাঁদের উচিত ছিল বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বা ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে বসা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC ISL East Bengal Mohun Bagan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy