Advertisement
১০ জানুয়ারি ২০২৫
Tiger Straying in Sundarbans

কুলতলির বাঘ ফিরে গেল আজমলমারির জঙ্গলে, কেন বার বার নদী টপকে আসছে গ্রামের পাশে?

বনাধিকারিকদের একাংশ এবং বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া’ (ডব্লিউটিআই)-এর মতে নদী পেরিয়ে বাঘের আসা-যাওয়া পুরোপুরি ঠেকানো কার্যত অসম্ভব।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৩০
Share: Save:

আবার রাত জাগলেন কুলতলির বনকর্মী এবং গ্রামবাসীরা। শুক্রবার সকালে নদীর পারে পায়ের ছাপ দেখে বোঝা গেল সাঁতার কেটে ওপারের আজমলমারির জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বাঘ।

বৃহস্পতিবার সকালে মাকড়ি নদীর পারে লোকালয় সংলগ্ন বনসৃজন প্রকল্পের ম্যানগ্রোভের মধ্যে বাঘের পায়ের ছাপ লক্ষ্য করেছিলেন মৈপীঠের বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগেনাবাদের কয়েক জন বাসিন্দা। বাঘের আসার খবর পাওয়ার পরেই প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জাল দেওয়া হয়। তিন দিক জাল দিয়ে ঘিরে গভীর জঙ্গলের দিক খোলা রাখা হয়েছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) নিশা গোস্বামী জানান, বাঘটি মাকড়ি নদী পেরিয়ে আজমলমারি-১ কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে।

চলতি সপ্তাহে উত্তর বৈকুণ্ঠপুরের মতোই নগেনাবাদেও বাঘকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন বনকর্মীরা। ভোরবেলায় ভাটার সময় মাকড়ি নদী পেরিয়ে বাঘ চলে গিয়েছে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের নিয়ে গঠিত বন দফতরের ‘টাইগার টিম’-এর সদস্য ওসমান মোল্লা বলেন, ‘‘ভোরে পায়ের ছাপ দেখে খোঁজ করার সময় দেখা যায়, বাঘ নদীতে নেমে জঙ্গলের দিকে চলে গিয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, গত রবিবার রাতে নগেনাবাদের কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে নলগোড়া বিটের অন্তর্গত শ্রীকান্ত পল্লি-কিশোরীমোহনপুর এলাকায় ওরিয়ন নালা পেরিয়ে বাঘ ঢুকেছিল। শোনা গিয়েছিল তার গর্জন। শেষ পর্যন্ত বুধবার বাঘটি আজমলমারি-১১-র জঙ্গলে ফিরে গিয়েছিল বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল। ফের যাতে বাঘ লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় চলে না আসে তার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু বনাধিকারিকদের একাংশ এবং বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া’ (ডব্লিউটিআই)-এর প্রসেনজিৎ শীলের মতে, নদী পেরিয়ে বাঘের আসা-যাওয়া পুরোপুরি ঠেকানো কার্যত অসম্ভব।

কুলতলির প্রতিটি নদীসংলগ্ন গ্রামের ওপারের জঙ্গলেই নাইলনের জাল বসানো আছে। কিন্তু মাকড়ি নদী এবং ওরিয়ন নালার সঙ্গে মাতলা নদীর যোগসূত্র রক্ষাকারী বাইনচাপড়ি, বৈঠাভাঙ্গা, ডাবরহানা, শ্রীফলা, লবপুর খাল গিয়েছে বাঘের বসত বাদাবনের মধ্যে দিয়ে। ওই খাঁড়িগুলি দিয়ে নিয়মিত মৎস্যজীবীদের নৌকা যাতায়াত করে। তাই সেখানে জাল বসানো সম্ভব নয়। বাঘ সেই খালগুলির জলে নেমে রাতের অন্ধকারে গ্রাম লাগোয়া বাদাবনের পারে চলে এলে বনকর্মীদের ‘কড়া নজরদারিতে’ও তা ঠেকানো কঠিন। তা ছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে বাঘ গ্রাম লাগোয়া নদীর পারে এলেও লোকালয়ে ঢুকে কোনও ‘ক্ষতি’ করেনি। বনকর্মী ও আধিকারিকদের তৎপরতায় এখনও কোনও প্রাণহানি হয়নি কুলতলিতে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের এলাকায় বাঘের সংখ্যাবৃদ্ধিও নদী টপকে আসা-যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

tiger straying Tiger Sundarban Sundarbans Kultali West Bengal Forest Department South 24 Parganas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy