শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
বছরভর তরজা লেগেই থাকে। উৎসবের কয়েক দিন সচারচর সেই অভ্যাসে সাময়িক বিরতি আসে। কিন্তু এ বার অন্য রকম!
সরাসরি কোনও আক্রমণে না গেলেও দুর্গা পুজোরই অনুষঙ্গ থেকে ‘অশুভ, বিনাশ, অসুর’ জাতীয় শব্দ ব্যবহার করে ইঙ্গিতে মুখর হচ্ছেন বিজেপির নেতারা। নিশানা কখনও বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের শাসন, কখনও শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পুজোর মধ্যে রাজ্যে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা ইঙ্গিতে বার্তা দিতে যাওয়ার পরে এ বার একই পথের পথিক হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অষ্টমীর দিনে তাঁর মুখে শোনা গেল রাজ্যে ‘অসুর ধ্বংসে’র ভবিষ্যদ্বাণী! বিরোধী দলনেতার এমন মন্তব্যকে ‘রুচিহীন’ আখ্যা দিয়েও তাঁকে পাল্টা ‘নারদ-অসুর’ বলতে ছাড়ছে না শাসক শিবির!
অষ্টমীর সকালে ‘শান্তিকুঞ্জ’ থেকে বেরিয়ে কাঁথি শহরের একাধিক মণ্ডপে গিয়ে প্রতিমা দর্শন করেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা। রীতি মেনে অষ্টমীর অঞ্জলিও দিয়েছেন। তার পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘আগের অসুর ধ্বংস হয়েছে। এখনকার অসুরও ধ্বংস হবে!’’ নিয়োগ-দুর্নীতির মামলা এবং কলকাতা হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে সাম্প্রতিক আবেদনের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নাম না করে বিরোধী দলনেতা অসুর প্রসঙ্গ টেনে খোঁচা দিয়েছেন বলে রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা।
কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের আয়োজনে রাম মন্দিরের আদলে নির্মিত পুজো মণ্ডপ উদ্বোধন করতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। সে দিন তাঁর বক্তব্য ছিল, রাজনীতির কথা বলার সময় এখন নয়। তবে বাংলা যাতে ‘দুর্নীতি ও অত্যাচার’ থেকে মুক্ত হয়, সেই প্রার্থনা তিনি করছেন। তার পরে সপ্তমীর সকালে রাজ্যে এসেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডা। শাহের মতোই সরাসরি না বলে নড্ডারও মন্তব্য ছিল, ‘‘আমি চাই, অশুভ শক্তির বিনাশ হয়ে শুভ শক্তির বিকাশ হোক।’’ সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের ওই মণ্ডপে দাঁড়িয়েই নড্ডা আরও বলেছিলেন, “যাঁরা ভাই-ভাতিজা করে, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচারের পথ নিয়েছে, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক!’’ শাহ-নড্ডাদের এই বক্তব্যের পাল্টা সরব হয়েছিল তৃণমূলও। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পথেই অষ্টমীতে বাক্য-বাণে রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।
জবাব এসেছে তৃণমূলের শিবির থেকেও। পুজোর মরসুমে শুভেন্দুর এমন মন্তব্যকে ‘রুচিহীন’ বলেই মনে করছে শাসক দল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘পুজোর মরসুমে একেবারে রুচি-বিহীন কথাবার্তা! শুভেন্দু নিজেই নারদ-অসুর। আগে উনি ধ্বংস হবেন, পরে বাকি কথা হবে!’’ পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের কেলোমাল গ্রামে বাপের বাড়ির পুজোয় এ দিনই যোগ দিতে গিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ ও কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়। সেখানে শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মালার উত্তর, ‘‘কোনও রাজনৈতিক প্রশ্নের উত্তর দেব না। তবে এটাই বলব যে, অশুভ শক্তির বিনাশ করতেই কিন্তু দেবী দুর্গার আবির্ভাব। তাই আমরাও চাই, অশুভ শক্তির বিনাশ হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy