বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ফাইল চিত্র।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি হয়েই বুধবার ভবানীপুরে উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি এ দিন সকালে হরিশ মুখার্জি রোডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির এলাকায় প্রচার সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির গলি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের আশপাশে বাড়ি বাড়ি প্রচারে যান। মমতার পাড়ায় ঢোকার চেষ্টা করতেই পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। সেখানে সুকান্ত এবং বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতোর সঙ্গে পুলিশের বচসা হয়। পরে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমার এক জন রাজ্যের নিরাপত্তারক্ষী আছেন। তাঁকে ছেড়ে আমি একাও মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় প্রচারে যেতে পারতাম। কিন্তু পুলিশ যেতে দেয়নি।’’ ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের প্রশ্ন, ‘‘এটা কি গণতন্ত্র? আমরা মানুষের কাছে প্রচারে যেতে পারব না?’’
কলকাতা পুলিশের (ডিসি সাউথ) আকাশ মেঘারিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘ওঁদের যে রাস্তায় প্রচারের অনুমতি ছিল, ওঁরা তার বাইরে অন্য রাস্তাতেও যাওয়ার চেষ্টা করায় বাধা দেওয়া হয়েছে।’’ করোনা আবহে ভোটের প্রচারে বড় জমায়েত করতে নিষেধ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুলিশের আরও বক্তব্য, সুকান্ত, প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে যথেষ্ট ভিড় ছিল। তাতে কোভিড বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছিল। যাঁরা জড়ো হয়েছিলেন, তাঁদের সকলের কোভিড প্রতিষেধক নেওয়া আছে কিনা, তা-ও জানা ছিল না। তাঁদের বাধা দেওয়ার সেটাও একটা কারণ।
বিজেপির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ের কটাক্ষ, ‘‘এগুলো আগে থেকে হারের অজুহাত সাজিয়ে রাখা। বিজেপি নেতারা প্রচার করুন! কে ওঁদের বাধা দেবে? কেনই বা দেবে? ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনিই অন্তত ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতবেন।’’
সুকান্ত পাল্টা বলেন, ‘‘সৌগতবাবুর যদি মনে হয়, কেউ আমাদের বাধা দেয়নি, তা হলে উনি রাজ্য সরকারকে দিয়ে তদন্ত করান। পুলিশের পোশাক পরে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা আদৌ পুলিশ কিনা দেখা হোক। আর আমার মনে হয়, তৃণমূল ভয় পেয়েছে। ওঁরা যেমন ভেবেছিলেন, খুব সহজে জিতে যাবেন, এখন বুঝেছেন, সেটা হচ্ছে না। তাই আমাদের প্রার্থীর নাম শুনলেই খেপে যাচ্ছেন। অপ্রকৃতিস্থ আচরণ করছেন।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসাবে সুকান্তর নাম ঘোষণা হয়েছে সোমবার। মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দেখা হয়নি। এ দিন সন্ধ্যায় শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করতেই দলের হেস্টিংস কার্যালয়ে যান সুকান্ত।
এ দিকে, ভবানীপুরে প্রিয়ঙ্কার সমর্থনে এ দিন প্রচার করেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী এবং শুভেন্দু। হরদীপ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ভবানীপুরের প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গে বলছেন কেন? কৃষক আন্দোলন কি ভবানীপুরের কোনও বিষয়?’’ তাঁর দাবি, ‘‘কৃষকদের বেশ কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। বাকি সমস্যাও আলোচনার টেবিলেই মিটবে।’’
শুভেন্দু এ দিন ভবানীপুরে প্রচারে ফের বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য। তার জন্য মুখ্যসচিব-সহ গোটা প্রশাসন ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আপনারা ভোটটা দেওয়ার সময় তৃণমূল সরকারের গত কয়েক বছরের জনবিরোধী কার্যকলাপ মাথায় রাখবেন।’’ শুভেন্দুর দাবি, রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প কিছু দিনের মধ্যেই ‘ব্লান্ডার’ বলে প্রমাণিত হবে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে যত মহিলাকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক কম মহিলা ওই প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। অচিরেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ব্লান্ডার বলে প্রমাণিত হবে।’’
শুভেন্দুর বক্তব্যের জবাবে তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, ‘‘শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতেও আমার রুচিতে বাধে। আমি এ রকম কৃতঘ্ন দেখিনি। উনি এবং অধিকারী পরিবার কী পাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে? রাজ্যে যে বিজেপি পর্যুদস্ত হয়েছে, তার অনেক কারণের মধ্যে শুভেন্দুর আচার-ব্যবহারও একটা কারণ। ভবানীপুরের মানুষ বিজেপিকে এবং ওঁকে উচিত শিক্ষা দেবেন। আর শুভেন্দু যেন মনে রাখেন, বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাজের জন্যই তাঁকে ২১৩টা আসন দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy