Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

হিন্দমোটর নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলব, রাহুল

হিন্দমোটর কারখানা বন্ধ হয়েছে মাস পনেরো আগে। এত দিন পর কারখানার ‘শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে’ এলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। আশ্বাস দিলেন, শ্রমিকদের দূরবস্থার কথা বলবেন রাজ্যপালকে।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন রাহুল সিংহ। ছবি: প্রকাশ পাল।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন রাহুল সিংহ। ছবি: প্রকাশ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হিন্দমোটর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০১:৫৯
Share: Save:

হিন্দমোটর কারখানা বন্ধ হয়েছে মাস পনেরো আগে। এত দিন পর কারখানার ‘শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে’ এলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। আশ্বাস দিলেন, শ্রমিকদের দূরবস্থার কথা বলবেন রাজ্যপালকে। কথা বলবেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গেও। রবিবার দুপুরে হিন্দমোটর স্টেশনের কাছেই দলের আয়োজিত রক্তদান শিবিরে এসেছিলেন রাহুল। সেখান থেকেই তিনি হিন্দমোটরে আসেন।

বস্তুত, কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে এর আগেও বিজেপি নেতারা এসে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ওই কারখানা খোলা নিয়ে দরবার করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার পর সময় পেরোলেও কারখানার গেট কিন্তু খোলেনি। উল্টে কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পে সায় দিয়ে অনেক শ্রমিকই আগাম অবসর নিয়ে ফেলেছেন। একলপ্তে বেশ কিছু ম্যানেজারকেও ছাঁটাই করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতির আশ্বাসে কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যেই সংশয় রয়েছে।

এ দিন স্টেশন গেটের সামনে কারখানার কিছু শ্রমিক দাঁড়িয়েছিলেন। রাহুল তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। শ্রমিকেরাও তাঁদের দুর্দশার কথা তাঁকে জানান। রাহুলের সঙ্গে ছিলেন রাজ্য নেতা রীতেশ তিওয়ারি, হুগলি জেলা সভানেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। বিজেপি সভাপতিকে শ্রমিক আবাসনে যাওয়ার জন্যও অনুরোধ করেন শ্রমিকেরা। বিজয় মিশ্র নামে জেনারেল স্টোর বিভাগের এক শ্রমিক বলেন, ‘‘শ্রমিক আবাসনের দুর্দশার কথা বলার নয়। পানীয় জল নেই। বিদ্যুৎ নেই।’’ অনিলকুমার সিংহ নামে অন্য এক শ্রমিকও কারখানার পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপি নেতাদের সামনেই রীতিমতো বিষোদগার করেন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

তবে শ্রমিকদের অনুরোধ মেনে শ্রমিক আবাসনে যেতে পারেননি রাহুলবাবু। কারণ হিসাবে তাঁদের তিনি বলেন, ‘‘তিনি আবাসনে ইচ্ছুক ছিলেন। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ কৃষ্ণাদেবীকে ফোন করে অনুরোধ করেছেন, তাঁরা যেন কারখানার ভিতরে না ঢোকেন। সেই কারণেই তিনি শ্রমিক আবাসনে যাবেন না।’’ শ্রমিকদের অভাব-অভিযোগ শোনার পরে রাহুল বলেন, ‘‘শ্রমিকদের আবাসন একমাস ধরে জলমগ্ন। বিদ্যুৎ নেই। খাওয়ার জল নেই। কালকেই কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীকে সব জানাব। রাজ্যপালকেও জানাব। রাজ্যপাল যেন রাজ্য সরকার এবং কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কিছু একটা উপায় বের করেন।’’

রাজ্যের শিল্প প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক হাত নিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘সিঙ্গুর থেকে একটা সিঙ্গাপুরি কলাও আনতে পারেননি। লন্ডন থেকে একটা লণ্ঠনও না।’’

রাহুলের এ হেন মন্তব্য প্রসঙ্গে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি ও বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘হিন্দমোটর কারখানা খোলার জন্য সরকার একের পর এক বৈঠক করেছে। শ্রমিকদের ভাতার বন্দোবস্ত করেছে। বিজেপি এখানে এসে এর আগেও মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে। আরও একবার শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করে গেলেন ওদের নেতা।’’ এসএসকেইউ-এর নেতা আভাস মুন্সি বলেন, ‘‘এক বছর আগে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য এসেও নানা আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কিছু করেননি। এ দিন রাহুলবাবুর আসার ব্যপারে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। বিজেপির কোনও সংগঠন ওখানে নেই। তবে, কেন্দ্রীয় সরকার কারখানা খুলতে উদ্যোগী হলে তো ভালই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE