—ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসতেই পাহাড়ে বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন দলীয় বিধায়ক। প্রতিটি নির্বাচনে গোর্খাল্যান্ড বা পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের দাবিকে সামনে রেখে বাইরের ‘মুখ’ এনে জিতেছে দল। এ বার তা করা চলবে না বলে দলীয় নেতৃত্বকে বার্তা দিলেন কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। অতীতেও একাধিক দলীয় নীতি নিয়ে মুখ খুলে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন বিধায়ক। দলের একাংশের বক্তব্য, এ বার বিষ্ণুপ্রসাদের নিশানায় সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহেরা! এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না শাসকদল তৃণমূল।
ভোট এলেই বিজেপি পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হয় বলে বরাবর অভিযোগ করে এসেছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবি হাতিয়ার করেই পাহাড়ে ভোট-বৈতরণী পার করতে চায় গেরুয়া শিবির। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগেও তার অন্যথা হচ্ছে না। কিন্তু অতীতে যে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়েছে বিজেপি, তাদেরও অভিযোগ, কথা দিয়ে কথা রাখেননি মোদী-শাহেরা। পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের জন্য কোনও কাজই হয়নি। সেই একই কথা শোনা গেল বিজেপি বিধায়কের মুখে। বিষ্ণুপ্রসাদ বলেন, ‘‘প্রতি বার লোকসভা নির্বাচনের সময় এক বিষয়। গোর্খাল্যান্ড বা স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলে ভোট চাওয়া। বাইরের মানুষ এসে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান নিয়ে যতটা না আবেগপ্রবণ হবেন, তার চেয়ে বেশি আবেগপ্রবণ হবেন এখানকার মানুষ। কেন্দ্র ও রাজ্যকে তারা নিজেদের কথা নিজেদের মতো করে বোঝাতে পারবে৷ তাতে সমস্যা সমাধান হবে।’’
বিধায়কের হুঁশিয়ারি, এ বারের নির্বাচনে বাইরের কাউকে প্রার্থী করা হলে তিনি নিজেই দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হবেন। বিষ্ণুপ্রসাদের কথায়, ‘‘এ বার বাইরের লোক দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হলে আমরা মেনে নেব না। দলের উচ্চ পর্যায়ে আমি এ কথা জনিয়েছি৷ তার পরেও যদি বাইরের কোনও ব্যক্তিকে প্রার্থী করা হয়, তা হলে আমি নিজে ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিসেবে লড়ব দার্জিলিং লোকসভা থেকে। তবে দল ছাড়ব না। দলে থেকেই লড়ব।’’
বিষ্ণুপ্রসাদের মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই দলের অস্বস্তিতে পড়ার কথা। এ ব্যাপারে বিজেপির দার্জিলিং জেলা (পাহাড়) সভাপতি কল্যাণ দেওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন , ‘‘এখন এ বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় নেই।’’ অন্য দিকে দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তাকে একাধিক বার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
এ নিয়ে দার্জিলিঙের তৃণমূল মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত বলেন, ‘‘পাহাড় বা দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের চিত্রটা খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিগত তিনটে লোকসভায় সাধারণ মানুষের সমর্থনে জিতেছে বিজেপি। কিন্তু মানুষের প্রাপ্তির জায়গা একেবারেই শূন্য। মিথ্যে প্রতিশ্রুতি ছাড়া এখন তাদের কাছে কিছুই নেই। অন্য দিকে পাহাড়ের মানুষের প্রতি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অকৃত্রিম ভালবাসা এবং পাহাড়ের একাধিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে৷ এ বারের লোকসভায় বিজেপি সেটা বুঝতে পারবে৷ বিজেপির অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য, মিথ্যে প্রতিশ্রুতির ফলে তাদের ভাল ফল হবে না। মানুষ পুরোপুরি বিজেপিকে পরিত্যাগ করবে৷ বিজেপির পাহাড়ের কর্মীরা বা পাহাড়বাসীরা আস্থাহীনতায় ভুগছেন এবং তারা একটা জিনিস বুঝে গিয়েছেন যে, বিজেপির কাছ থেকে তারা আর কিছু পাবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy