Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
BJP

ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের মুখে ‘গড়’ উত্তরবঙ্গে বিজেপির পদ ছাড়ছেন পর পর নেতা, এ বার ইস্তফা বিধায়কের

কেউ লিখিত ভাবেই দলকে জানিয়ে দিচ্ছেন। কেউ আবার জানাচ্ছেন দলের হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে। বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে রদবদলের পর থেকেই পদত্যাগের হিড়িক শিলিগুড়িতে।

(বাঁ দিকে) দুর্গা মুর্মু এবং সুকান্ত মজুমদার।

(বাঁ দিকে) দুর্গা মুর্মু এবং সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৩ ১৪:৫৪
Share: Save:

কেউ লিখিত ভাবেই দলকে জানিয়ে দিচ্ছেন। কেউ আবার জানাচ্ছেন দলের হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে। বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে রদবদলের পর থেকেই দলীয় পদাধিকারীদের পদত্যাগের হিড়িক শিলিগুড়িতে। চলতি সপ্তাহের বুধবার থেকে শিলিগুড়ি এবং মহকুমার বিভিন্ন অঞ্চলের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি, দলের মহিলা মোর্চা এবং যুব মোর্চার পদাধিকারীদের একটি বড় অংশ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এ বার পদত্যাগপত্র জমা দিলেন এক বিধায়কও। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ফাঁসিদেওয়ার বিজেপি বিধায়ক দুর্গা মুর্মু। বিজেপি সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েক নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে উত্তরবঙ্গ গেরুয়া শিবিরের ‘গড়’ বলেই পরিচিত। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনও রয়েছে। তার ঠিক আগে পাশের শিলিগুড়িতে একের পর এক নেতার দলীয় পদ থেকে এই ভাবে ইস্তফায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি তৈরি হওয়ার কথা দলের অন্দরে।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়কের পদত্যাগপত্রে অবশ্য সাংগঠনিক পদে রদবদল নিয়ে ক্ষোভের কথা নেই। পদত্যাগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, বিধানসভা এবং নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণেই সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক পদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চান। বিজেপিতে পদ ছাড়ার হিড়িক নিয়ে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত বলেন, ‘‘বিগত দু’-তিন বছর ধরে আদি বিজেপি এবং তৎকাল বিজেপির মধ্যে একটা মতপার্থক্য দেখা দিচ্ছে। অধিকাংশ সময়েই তা প্রকাশ্যে চলে আসছে। এদের মধ্যে কোনও তালমিল বা সমঝোতা নেই। তৃণমূল-সহ অন্যান্য দল থেকে যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, যাঁরা প্রচুর দুর্নীতি করেছেন, এই সমস্ত ঘটনার পিছনে তাঁরাই রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অবস্থা খুবই করুণ। সাংগঠনিক ভাবে তারা ব্যর্থ। তাই তাদের কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির সাহায্য নিতে হচ্ছে।’’

গত ৬ অগস্ট শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতির পদ থেকে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণকে সরিয়ে দেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় দলের রাজ্য কিসান মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অরুণ মণ্ডলকে। দলীয় সূত্রে খবর, এই রদবদলে নিজের পছন্দের কর্মীদের বিভিন্ন পদে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে অরুণের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভপ্রকাশ করেন কর্মীদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার আলোচনা হলেও বেরোয়নি সমাধানসূত্র। তার পরেই পদত্যাগ করেন একের পর এক পদাধিকারী। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিনে পদত্যাগের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়েছে। সংখ্যাটা সব চেয়ে বেশি মহিলা মোর্চায়। তাঁদের প্রায় সকলেই ইস্তফাপত্রে জানিয়েছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না-পেরে পদত্যাগ করছেন। এ নিয়ে দলের অন্দরে বিস্তর জল্পনার মধ্যেই দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ফাঁসিদেওয়ার বিধায়ক।

এ বিষয়ে দুর্গাকে একাধিক বার ফোন করা হয় আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। দলীয় সূত্রে খবর, বিধানসভার বাদল অধিবেশনের জন্য তিনি কলকাতায় রয়েছেন। দলের বিভিন্ন পদাধিকারীর পদত্যাগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অধুনা প্রাক্তন সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আনন্দময়ও। তিনি বলেন, ‘‘বিধানসভার অধিবেশনের জন্য আমি বাইরে আছি। তবে শুনেছি যে, নতুন কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। নতুন কমিটি তৈরি হল এ রকম হয়েই থাকে। কারও কারও হয়তো সত্যিই খারাপ লেগেছে।’’ তবে আনন্দময় জানান, পদত্যাগ করলেও কেউ দল ছেড়ে যাননি। শীঘ্রই এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে।

অরুণের অবশ্য দাবি, তাঁর কাছে কোনও ইস্তফাপত্র আসেনি। তিনি বলেন, ‘‘কে কোথায় পদত্যাগ করছেন, আমার কাছে তার কোনও কোন খবর নেই। আমার কাছে কোনও পদত্যাগপত্র জমা পড়েনি। আমি দলীয় কার্যালয়-সহ বিভিন্ন মণ্ডল অফিসে ঘুরছি। দলের কাজ করছি। কিন্তু আমার কাছে কোনও পদত্যাগপত্র জমা পড়েনি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Durga murmu Suvendu Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy