Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
Nandigram

নন্দীগ্রামের রাজনীতিতে ‘প্রলয়’ আনা নেতাই ছেড়ে দিতে চান বিজেপি, নতুন মেঘ শুভেন্দুর এলাকায়

গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রচারের আলোয় চলে এসেছিলেন প্রলয় পাল। নন্দীগ্রামের এই বিজেপি নেতাকে ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রলয়ই এ বার রাজনীতি ছাড়তে চান।

বিজেপির সঙ্গে রাজনীতিও ছাড়তে চান প্রলয়।

বিজেপির সঙ্গে রাজনীতিও ছাড়তে চান প্রলয়। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:০৮
Share: Save:

আর রাজনীতি করবেন না। সমাজমাধ্যমে ঘোষণা করে দিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা প্রলয় পাল। তার পরেই আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রলয় জানালেন, শনিবার সকাল ১০টার সময় তিনি জেলা সভাপতি তাপস মণ্ডলের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে আসবেন। কেন এমন সিদ্ধান্ত? প্রলয় বললেন, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে দলে অনেকে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের জন্য পদ ছেড়ে দিতে হবে। তাই পুরনো হিসাবে সরে যাওয়া উচিত বলেই আমি মনে করছি।’’

প্রলয়ের জবাবেই স্পষ্ট যে, তিনি বিজেপির ‘আদি’ বনাম ‘নব্য’ বিবাদের জেরেই রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন। তবে একটি বারের জন্যও দলের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কিংবা তাঁর এলাকার বিধায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও তিনি এ বিষয়ে কিছু বলেননি। এবং বলতে চান না বলেও জানিয়েছেন প্রলয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খেতে যাব কেন! যা বলার জেলা সভাপতিকেই জানিয়েছি।’’

অনেক দিন রাজনীতিতে থাকলেও গত বিধানসভা নির্বাচনের মুখে মুখে প্রচারের আলোয় চলে আসেন প্রলয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন নন্দীগ্রামের প্রার্থী। প্রলয়ের সঙ্গে মমতার ফোনে কথোপকথনের একটি অডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায়। দাবি করা হয়, বিজেপির প্রলয়ের কাছে নির্বাচনে জয়ের জন্য সাহায্য চেয়েছেন মমতা। পরে মুখ্যমন্ত্রী এক সময়ে তৃণমূলে থাকা প্রলয়কে ফোন করার কথা নিজেই জানিয়ে দেন। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েই ২০২১ সালের ৩০ মার্চ মমতা বলেছিলেন, ‘‘মনে রাখবেন, প্রার্থী হিসেবে আমি কারও কাছে আর্জি জানাতেই পারি যে আপনার ভোটটা আপনাকে দেবেন। যখন নরেন্দ্র মোদী তৃণমূলের লোকেদের ফোন করেন, তখন দোষ হয় না? উনি তো পঞ্চাশটা করে ফোন করেন! আমি যদি নন্দীগ্রামের এক জন ভোটারের অনুরোধে তাঁকে ফোন করি, অন্যায়টা কোথায়? এ রকম ফোন আমি অনেক করব। আমি জনগণের সেবা করি। কেউ কিছু জানতে চাইলে, তাকে জানানো আমার কর্তব্য। সে যদি কথা রেকর্ড করে, ভাইরাল করে, তার শাস্তি হওয়া উচিত। আমার নয়। কথা রেকর্ড করে ভাইরাল করা অপরাধ। এটা প্রতারণা। করা যায় না।’’

বৃহস্পতিবারই তমলুকের নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা হয়।

বৃহস্পতিবারই তমলুকের নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা হয়।

প্রলয় এখন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি। সদ্যই এই জেলায় বিজেপির নতুন সভাপতি হয়েছেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। বিজেপিতে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত তাপসী বৃহস্পতিবারই নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করেছেন। সেই কমিটিতে সহ-সভাপতি পদেই রয়েছেন প্রলয়। তবে বিজেপির ‘আদি’ নেতাদের দাবি নতুন জেলা কমিটিতে নতুনদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রলয় সরাসরি এমন কোনও অভিযোগ তোলেননি। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি ফেসবুকে ‘ভাল থেকো রাজনীতি। আর নয়। দাও বিদায়’ লিখে পোস্ট করেছেন। এর পরেই জল্পনা তৈরি হয় প্রলয় কি শুধুই রাজনীতি ছাড়ছেন না কি তাঁর এক সময়ের দল তৃণমূলে ফিরে যাবেন? প্রলয় বলেন, ‘‘আমি রাজনীতি ছাড়তে চাই। অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়ার কথা তো বলিনি।’’

প্রসঙ্গত জেলা সভাপতি তাপসী শুভেন্দুর সঙ্গে সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর। হলদিয়ার প্রাক্তন বাম বিধায়ক তাপসী ওই আসন থেকেই বিজেপির টিকিটে জেতেন ২০২১ সালে। গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার মাত্র দু’বছরের মধ্যে তাপসীকে জেলা সভাপতি করার পর থেকেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল জেলা বিজেপির আদি নেতাদের মধ্যে। তবে তার জেরে যে প্রলয় দল ও রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেবেন, তেমনটা কেউ আঁচ করতে পারেননি। শুক্রবার প্রলয়ের ঘোষণার পরে আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে একাধিক বার তাপসীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও ব্যস্ততার জন্য কথা বলতে চাননি তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Nandigram BJP Suvendu Adhikari Proloy Pal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy