সুদর্শন পরামানিক
কুপিয়ে-পিটিয়ে হুগলির খানাকুলের বিজেপি নেতা সুদর্শন পরামানিককে (৩৮) খুনে জড়িত অভিযোগে শনিবার রাতেই ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
স্বাধীনতা দিবসের সকালে জাতীয় পতাকা তোলাকে কেন্দ্র করে গোলমালের জেরে খানাকুলের সাজুরঘাটে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সুদর্শনকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই এলাকায় আগে তৃণমূল জাতীয় পতাকা তোলে। তার পরে উল্টো দিকে সুদর্শনরা জাতীয় পতাকা তুলতে গেলে গোলমাল হয়।
ঘটনার জেরে তেতে ওঠে এলাকা। সাজুরহাট এবং সংলগ্ন নতিবপুর গ্রামে তৃণমূল কর্মীদের কিছু দোকান-বাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। নতিবপুরের পরামানিক পাড়াতেই সুদর্শনের বাড়ি। দৌলতচকের ফেরিঘাটে আগুন লাগানো হয়। তৃণমূলের কার্যালয় এবং একটি শহিদ বেদিতে ভাঙচুর চালানো হয়। খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ হয় পুলিশকে ঘিরেও। দুপুর ১টা নাগাদ লাঠি চালিয়ে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। দুপুরে ময়নাতদন্তে পাঠানোর সময় আরামবাগের গৌরহাটি মোড়ে মৃতদেহ নামিয়ে অবরোধ করে বিজেপি। রবিবার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ খুনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘স্বাধীনতা দিবসে দেশের জাতীয় পতাকা তুলতে গিয়ে তৃণমূলের হাতে খুন হতে হল আমাদের কর্মীকে। আগামী দিনে সবাই নিজেদের বাঁচাতে হাতে ত্রিশূল নিয়ে ঘুরব।’’ বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “রাজ্যে এমনই সরকার চলছে যে স্বাধীনতা দিবসের দিনেও বিরোধী দলের জাতীয় পতাকা তোলার অধিকার নেই।’’ শাসক দলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছেন নিহতের স্ত্রী মামণিও। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। দলীয় কর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘বিজেপি নিজেদের মধ্যে খুনোখুনি করে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে তৃণমূলকে দোষারোপ করছে।’’
ধৃত ৬ জন এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত। তবে, মূল অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা কলিমুদ্দিন মল্লিককে রবিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ ধরতে পারেনি। এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ১৮ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মূল অভিযুক্ত-সহ বাকি ১২ জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ধৃতদের রবিবার আরামবাগ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠান।
সুদর্শন খুনের প্রতিবাদে এ দিন বিজেপির ডাকা খানাকুল বিধানসভা এলাকায় ১২ ঘণ্টার বন্ধে দোকানপাট খোলেনি। রাস্তায় যানবাহনও প্রায় ছিল না। রামমোহন এলাকায় বন্ধের সমর্থনে রাস্তায় নামায় এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। আবার বোমাবাজি করে বিজেপি জগন্নাথপুর ও গৌরাঙ্গপুর এলাকায় ১০০ দিনের কাজ বন্ধ করে দেয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করে বন্ধ সফল বলে দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy