বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে সব বন্ধ কারখানা খুলে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলে এ বার প্রতিশ্রুতি দেওয়া শুরু হল। আসানসোলে শনিবার বাজেট সংক্রান্ত আলোচনায় এসে এমনই দাবি করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়। এক দিকে, কেন্দ্রীয় বাজেটকে হাতিয়ার করে রাজ্যের জন্য কেন্দ্র কতটা কাজ করেছে, তার খতিয়ান দেওয়া এবং অন্য দিকে, রাজ্য বাজেট কতটা পিছিয়ে রয়েছে, সেই দাবি করে ইতিমধ্যেই প্রচারে নেমেছে বিজেপি। তারই অঙ্গ হিসেবে কারখানা খোলার প্রতিশ্রুতি দিল বিজেপি। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দেশে শিল্পের দুর্দশা নিয়ে পাল্টা সরব হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
আসানসোলে বিজেপি যুব মোর্চা আয়োজিত ‘বাজেট টক’ কর্মসূচিতে এ দিন অমিত ছাড়াও যোগ দিয়েছিলেন বালুরঘাটের বিধায়ক তথা অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী, আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালেরা। সেখানেই অমিত অভিযোগ করেছেন, “গত পাঁচ বছরে রাজ্যে তালিকাভুক্ত প্রায় চার হাজার কারখানায় ঝাঁপ পড়েছে। পশ্চিমবঙ্গে কাজ না পেয়ে প্রতি বছর রাজ্যের প্রতিটি লোকসভা থেকে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক হচ্ছেন। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের লজ্জা।” এর পরেই তাঁর প্রতিশ্রুতি, “আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপি সরকার গড়লে রাজ্যের সব বন্ধ কারখানা খোলা হবে। দরকারে সাহায্য নেওয়া হবে কেন্দ্রেরও।” এই সূত্রেই রাজ্য বাজেটে কর্মসংস্থানের কোনও দিশা নেই, গত ১৪ বছরে পশ্চিমবঙ্গে বিদেশি পুঁজির বিনিয়োগ মাত্র ১%— এমন নানা অভিযোগ তুলেছেন অমিত। প্রসঙ্গত, এর আগে রাজ্য-বাজেটকে ‘বেকারদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে সরব হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
দুই বাজেটের তুলনা করে বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক এ দিন ফের দাবি করেছেন, “রাজ্য বাজেটে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। কিন্তু দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নতির জন্য কেন্দ্রের বাজেটে বহু উদ্যোগের কথা বলা আছে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার পরিকল্পনা রয়েছে।” পাশাপাশি, অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, রাজ্য-বাজেটে নারী নিরাপত্তার জন্য বিশেষ কোনও পদক্ষেপের উল্লেখ নেই।
যদিও বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “মমতা ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যে বন্ধ কারখানার দরজা শুধু খোলেনি, নতুন কারখানাও তৈরি হয়েছে। বিজেপি শিল্পের যে কী দুর্দশা করতে পারে, তা কেন্দ্র দেখিয়েছে। এদের বাজেট বিপজ্জনক, রাজ্যের বাজেট ইতিবাচক।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)