ফের বিতর্কে কালোসোনা মণ্ডল। সোমবার তারাপীঠে। নিজস্ব চিত্র
প্রকাশ্যে পুলিশকে হুমকি দিয়ে আবারও বিতর্কে বীরভূমের বিজেপি নেতা কালোসোনা মণ্ডল। সোমবার তারাপীঠ থানা চত্বরেই পুলিশের পা কেটে দেওয়া ও জিভ ছিঁড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ওই বিজেপি নেতা। চলতি বছরই গত ৭ জানুয়ারি মহম্মদবাজার থানার শ্রীকান্তপুরে দলীয় সভায় পুলিশ-প্রশাসন ও শাসক দলকে হুমকি দেওয়া এবং প্ররোচনামূলক বক্তৃতা করে কালোসোনা বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন। ওই মামলা এখনও চলছে। ফের তারাপীঠে পুলিশকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে কালোসোনা মণ্ডলের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ।
লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে পরেই তারাপীঠ থানার পাইকপাড়া গ্রামে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বিজেপির দাবি, ওই ঘটনায় পুলিশ দুই বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা করেছে। কিন্তু, তৃণমূলের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, পাইকপাড়া ঘটনা একটা উদাহরণ। জেলা জুড়েই এ রকম নানা ঘটনায় পুলিশ বিজেপি কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে। বিজেপি কর্মীদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হচ্ছে। ছাড় দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলকে। যদিও পুলিশ এবং শাসকদল এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে প্রথম থেকেই।
পুলিশি ‘পক্ষপাত’ বন্ধ করা, তারাপীঠ থানার ওসি-র ‘নিরপেক্ষ’ ভাবে কাজ করা, এলাকায় বেআইনি বালি ব্যবসা, তোলা আদায় বন্ধ করা-সহ ১১ দফা দাবি নিয়ে এ দিন তারাপীঠ থানায় স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল বিজেপি-র। নেতৃত্ব দেন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডল। বিজেপি কর্মীরা তারাপীঠ এলাকায় প্রথমে মিছিল করে শেষে থানা চত্বরে জমায়েত হোন। স্মারকলিপি প্রদানের আগে কালোসোনা বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘‘তারাপীঠ থানায় এক পুলিশ অফিসার বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, লাথি মেরে ভরে দেব। সেই পুলিশ অফিসারকে চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি লাথি মেরে দেখুন। যদি আমি বাপের বেটা হই, তবে পা কেটে দেখিয়ে দেব!’’ বিজেপি কর্মীরা এর পরেই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তোলেন। এখানেই না থেমে পুলিশকে কালোসোনার হুঁশিয়ারি, ‘‘সংবিধান বিরোধী কাজ করবেন না। সংবিধান মেনে কাজ করুন। বিজেপির কার্যকর্তাকে লাথি মেরে গালি দিলে টেনে জিভ ছিঁড়ে দেব!’’
পাইকপাড়ার ঘটনা নিয়ে পুলিশের বক্তব্য, কোনও রকম পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হয়নি। বিজেপি কর্মীদের গালিগালাজ এবং লাথি মারার কথা বলার অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তারাপীঠ থানার ওসি এই ধরনের কথা বলতেই পারেন না। তা ছাড়া, পাইকপাড়ার ঘটনায় দু’জন বিজেপি কর্মীর পাশাপাশি এক জন তৃণমূল কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘পুলিশ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে মামলা রুজু করছে।’’
কালোসোনার যদিও দাবি, জিভ টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার কথা বলে কোনও অন্যায় করেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখানকার কর্মীরা আমাকে বলেছেন, তারাপীঠ থানার এক অফিসার লাথি মেরে জেলে পুরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। সেই জন্যই আমি ওই কথা বলেছি। আবার যদি পুলিশ এই ধরণের আচরণ করে, আমিও আবার ওই নিদানই দেব।’’ রামপুরহাটের বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষ ছ’দিনেই বুঝতে পারছেন, বিজেপি নেতাদের ঔদ্ধত্য কোথায় পৌঁছেছে। অচিরেই এর ফল সবাই বুঝতে পারবে।’’ তারাপীঠের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের রামপুরহাট ২ ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘রাম নামে ভোট দিয়ে মানুষ এখন বুঝছে রামের বদলে রাবণকে ভোট দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy