মাহেশ্বরী সদনে বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার প্রশিক্ষণ শিবিরে বক্তব্য পেশ করছেন অরবিন্দ মেনন। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে
এক দিকে ধর্মীয় ভাবাবেগের ভিত্তিতে মেরুকরণের জোর চেষ্টা। অন্য দিকে সংখ্যালঘু ভোটও বাড়ানোর প্রয়াস। বাংলায় বিজেপির রণকৌশল এ বার এ রকমই। সংখ্যালঘুদের ঘরে ঘরে গিয়ে ‘মাথায় ইঞ্জেকশন দিতে হবে’। বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার প্রশিক্ষণ শিবিরে ভাষণ দিতে গিয়ে শুক্রবার এমন মন্তব্যই করেছেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। আর রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘ভোটের জন্য কয়েক জন নেতা হাতের পুতুল বানিয়ে রেখেছেন মুসলিমদের।’’
মাহেশ্বরী সদনে বৃহস্পতিবারই শুরু হয়েছে বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার দু’দিনের প্রশিক্ষণ শিবির। প্রথম দিনে দিলীপ ঘোষ, অরবিন্দ মেনন, শমীক ভট্টাচার্য, মুকুল রায়, রাহুল সিংহরা ভাষণ দেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কী ভাবে কাছে টানতে হবে বাংলায়, তা নিয়ে মোর্চার কর্মীদের পরামর্শ দেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা।
মেনন নিজের ভাষণে বলেন, ‘‘ঝোপড়ি ঝোপড়ি মে যাকে, খোপড়ি খোপড়ি মে ইঞ্জেকশন দেনা হ্যায়।’’ অর্থাৎ সংখ্যালঘুদের ঘরে ঘরে পৌঁছতে হবে, তাঁদের মগজে বিজেপির বার্তা ঢোকাতে হবে, বিজেপি-র প্রতি আস্থা জাগাতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘২০১৯, বিজেপি ফিনিশ’ ডাক দিয়ে ১৯ জানুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ
দিলীপ ঘোষ মনে করছেন, বিজেপির সঙ্গে মুসলিমদের একটা দূরত্ব তৈরি করে রাখা হয়েছে। কারা দূরত্বটা তৈরি করে দিলেন, বিজেপি যদি নিজে দূরত্ব না চায়, তা হলে অন্য কেউ কী ভাবে তা করবেন, সে সবের স্পষ্ট ব্যাখ্যা অবশ্য মেলেনি। তবে দিলীপের মতে, বছরের পর বছর ধরে মুসলিমদের শুধু ‘ভোটব্যাঙ্ক’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, তাঁদের উন্নয়ন ঘটানো হয়নি। রাজ্য বিজেপির সভাপতির কথায়, ‘‘সংখ্যালঘু সমাজ স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বঞ্চিত। দেশের উন্নতির সুফল তাঁরা সবচেয়ে কম পেয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: সিবিআই দফতরে বিক্ষোভ শেষে কর্মীদের ক্ষোভের মুখে কংগ্রেস নেতারা নিজেরাই
মুসলিমদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বঞ্চনা হয়েছে— রাজ্য বিজেপির কোনও সভাপতির মুখে এমন কথা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, বাংলার রাজনীতিতে শুধু মেরুকরণে সব লক্ষ্য যে পূরণ হবে না, তা বিজেপি বুঝতে পারছে। তাই হিন্দু ভোট একত্র করার চেষ্টার পাশাপাশি মুসলিমদেরও এ বার কাছে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি।
দিলীপ ঘোষ এ দিন আরও বলেন, ‘‘মুসলিমদের শুধু ভোটার করে রাখা হয়েছে, সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি। কয়েক জন নেতা ঠিক করে দিচ্ছেন যে, এঁরা কী করবেন। ভোটের জন্য এঁদেরকে কারও কারও হাতের পুতুল করে রাখা হয়েছে।’’
দিলীপের দাবি, নরেন্দ্র মোদীর সরকার আসার পরে মুসলিমরা বুঝতে পারছেন যে, মোদীজি-ই সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন ঘটাতে পারবেন। দিলীপের কথায়, ‘‘তিন তালাকের অবসান এই সব ভেঙে দিয়েছেন। এখন মুসলিম সমাজ বিজেপিতে আসছে।’’
বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া - পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy