শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র
তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখন শুভেন্দু অধিকারীর বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার দিকে তাকিয়ে বিজেপি। তাদের আশা, তার পরেই শুভেন্দু তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করবেন। কারণ, মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর শুভেন্দু নিজেই বলেছিলেন, অতঃপর যে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই তিনি নিন না, তা নেবেন বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার পর। তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় দলের সঙ্গে শুভেন্দুর মধ্যস্থতার কাজ করছিলেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার রাতে শেষ বৈঠকের পর শুভেন্দু তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন, একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। ফলে শুভেন্দুর তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের সম্ভাবনা কার্যত শেষ। নাটকীয় কোনও পট পরিবর্তন না ঘটলে শুভেন্দুর তৃণমূল ত্যাগও নিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি-র আশা, এই তরুণ নেতা তাদের দলেই যোগ দেবেন।
রাজ্য বিজেপি সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে শুভেন্দুর সঙ্গে ফোনে কথা হয় বিজেপি-র দুই শীর্ষনেতার। ওই কথোপকথনে শুভেন্দু জানান, তিনি দ্রুত বিধায়ক পদ ছাড়বেন। বিধায়ক পদ ছাড়লেই শুভেন্দুর সঙ্গে আলোচনা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। তবে সরকারি ভাবে এখনও পর্যন্ত শুভেন্দু তৃণমূলেরই বিধায়ক। তাই এই পরিস্থিতিতে মেপে পা ফেলতে চাইছেন বিজেপি নেতারাও। তবে বিজেপি-র একটি অংশের বক্তব্য, শুভেন্দু রাজ্য নেতাদের সঙ্গে যতটা না যোগাযোগ রাখছেন, তার থেকে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে। ফলে শুভেন্দুর মতিগতি তাঁরাও খুব একটা বুঝতে পারছেন না। যদিও শুভেন্দু শিবির ওই বক্তব্য খণ্ডন করেছে। তাদের দাবি, শুভেন্দুর সঙ্গে এখনও রাজ্য বা কেন্দ্র— কোনও স্তরেই বিজেপি নেতাদের কোনও কথাবার্তা হয়নি। তিনি বিজেপি-তে যোগ দেবেন, এই দাবিরও এখনও পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা নেই।
শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রকাশ্যেই শুভেন্দুকে দলে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু শুভেন্দু বা তাঁর শিবিরের তরফে তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি। বিগত কয়েকদিন ধরে দিলীপও প্রকাশ্যে শুভেন্দু প্রসঙ্গ এড়িয়ে চলছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠদের মতে, শুভেন্দু এখনও তৃণমূল বিধায়ক। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলে তারপরই দিলীপ শুভেন্দুকে নিয়ে মন্তব্য করবেন। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর শুভেন্দু প্রসঙ্গে মন্তব্য করে বিপাকে পড়তে হয়েছিল বিজেপি নেতাদের। কারণ, বিজেপি নেতাদের উদাত্ত আহ্বানের পরেও শুভেন্দু সৌগত-সহ তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। বৈঠক থেকে শুভেন্দুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। যার পরে তৃণমূল দাবি করে, শুভেন্দু তৃণমূলেই থাকবেন।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে কৃষকদের সঙ্গে ফোনে কথা মমতার, দিলেন পাশে থাকার বার্তা
তবে শুভেন্দু বিজেপি-তে এলে দলের যে লাভ হবে, তা নিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় বিজেপি-র অন্দরে খুব দ্বিমত নেই। দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় শুক্রবারও বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু গণ আন্দোলনের নেতা। তিনি বিজেপি-তে এলে বিজেপি-র ভোটব্যাঙ্ক আরও মজবুত হবে।’’ শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠমহলের বক্তব্য, শুক্রবার কলকাতায় আসার কথা শুভেন্দুর। রাতে কিছু অনুগামীর সঙ্গে তাঁর একটি বৈঠক রয়েছে। তৃণমূলের প্রতি শুভেন্দুর ‘অসন্তোষ’ জন্মানোর শুরু থেকে ওই অনুগামীরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। ওই অনুগামীরা সকলেই আঞ্চলিক ও জেলা স্তরের প্রথমসারির নেতা। শুক্রবার শুভেন্দুর সঙ্গে বিজেপি-রও এক সর্বভারতীয় নেতার বৈঠক হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy